খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশ ছুঁই ছুঁই

অনলাইন ডেস্ক / ২১৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪

দেশের বাজারে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সর্বশেষ গত মে মাসে আবার বেড়ে ৯.৮৯ শতাংশে উঠেছে। এর বড় চাপ পড়েছে খাদ্যে। আগের কয়েক মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও মে মাসে ১০.৭৬ শতাংশে উঠেছে। এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী নিম্ন আয়ের মানুষ।

তবে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) বলছে, সরকারের হিসাবের চেয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ তথ্যে মূল্যস্ফীতির এমন চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯.৮৯ শতাংশে উঠেছে।

মার্চে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের ব্যবধানে গড় মূল্যস্ফীতি কমেছে ০.১৫ শতাংশ। মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯.১৯ শতাংশে নেমেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলো কাজ দিচ্ছে না।

মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়ালেও আইএমএফের শর্ত মানতে টাকার মান কমানো হচ্ছে। জ্বালানি-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতিতে।

মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি সামান্য কমলেও অস্বাভাবিক বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। যেখানে এপ্রিল মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.২২ শতাংশ, তা মে মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৭৬ শতাংশ।

শহরে এই খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরো কিছুটা বেশি। গত মার্চ মাসে এই হার ছিল ৯.৮৭ শতাংশ। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে সর্বোচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৫৬ শতাংশ।

বিআইডিএসের জরিপ বলছে, দেশে বর্তমানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ। বাড়তি এ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ অসুবিধায় রয়েছে। মূল্যস্ফীতি হার বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মাছের দাম। গত এক বছরে মাছের দাম ২০ শতাংশের ওপর বেড়েছে। এরপর রয়েছে পোলট্রি মুরগির দাম। দেশের পোলট্রি খাদ্যের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। গত দুই বছরে আমদানি করা এসব খাবারের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, যা শেষ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।

মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুধু সুদহার বাড়ানো বা এ রকম পৃথক পদক্ষেপ নিলে হবে না। এর সঙ্গে শুল্ক কমানোসহ সমন্বিতভাবে বেশ কিছু উদ্যোগ নিতে হবে।

বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এপ্রিল মাসে যেখানে শহরের গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৭২ শতাংশ, সেখানে গ্রামে ৯.৯৯ শতাংশ। যদিও শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি গ্রামের তুলনায় বেশি দেখা গেছে মে মাসে। আর শহরের তুলনায় গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেশি দেখা গেছে।

অন্যদিকে দেশের মূল্যস্ফীতি যে হারে বাড়ছে, সেই হারে মজুরি বাড়ছে না। অর্থাৎ দেশের মানুষের আয়ের চেয়ে খরচ বেশি হচ্ছে। বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মে মাসে দেশে মজুরি বৃদ্ধির হার ৭.৮৮ শতাংশ। যা আগের মাসে ছিল ৭.৮৫ শতাংশ। সেখানে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯.৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ আয়ের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ ব্যয় বেশি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/