ব্যাংক লুট, অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগে সমালোচিত ব্যবসায়ীক গ্রুপ এস আলম সংশ্লিষ্ট নাবিল গ্রুপের ১৪টি প্রতিষ্ঠানের তথ্য ও রেকর্ডপত্র চেয়ে অষ্টমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে ২০২৩ সাল থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত আরও সাতবার তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর। কিন্তু এতবার চিঠি দিয়ে তথ্য চাইলেও কোনও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ দুদকের। সবশেষ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) আবারও চিঠি দিয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাত। এবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনও জবাব না পাওয়ায় অনুসন্ধান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
দুদক থেকে ৮ম বারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঋণের নামে ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেওয়া হয়েছিল সেগুলো হচ্ছে- মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজ, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড, নাবিল কোল্ড স্টোরেজ, নাবিল ফিড মিলস লিমিটেড, নাবিল অটো রাইস মিল, নাবিল অটো ফ্লাওয়ার মিল, শিমুল এন্টারপ্রাইজ, নাবা এগ্রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, আনোয়ারা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, নাবা ফার্ম লিমিটেড এবং নাবিল গ্রীন গ্রুপস লিমিটেড।
এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চাকতাই শাখা, জুবলি রোড শাখা, খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা, গুলশান করপোরেট শাখা, রাজশাহী শাখা, রাজশাহীর নিউমার্কেট শাখা এবং পাবনা শাখা থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, নাবিল গ্রুপের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে চাহিত রেকর্ডপত্র ও তথ্য সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রথম চিঠি দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর। এর পরের মাসে ১৮ ডিসেম্বর ও ২০২৪ সালের ২৮ জানুয়ারি দুটি তাগিদপত্র দেওয়া হয়। গত ১৫ জানুয়ারি বর্ণিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিদর্শন চলমান থাকায় কার্যক্রম শেষে প্রতিবেদন পাঠানো হবে বলে জানানো হয় দুদককে। পরবর্তীতে গত ৭ জুলাই এবং ১৩ আগস্ট পুনরায় চিঠি দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। কিন্তু অদ্যাবধি কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। এতে অনুসন্ধান কার্যক্রমের অগ্রগতি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চাহিত রেকর্ডপত্র ও তথ্যগুলো সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এসব দুদকের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে দুদকের আর কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।