কেশবপুরে ৪৫০টি গ্রামীন উন্নয়ন প্রকল্পের ৩ কোটি টাকা লুটপাট

Reporter Name / ১৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫


খায়রুল আনাম,  কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি 

  • আপডেট সময় :
    ০৩:১৮:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫




    ২৮

    বার পড়া হয়েছে

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News)
ফিডটি

যশোরের কেশবপুরে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সংস্কারে সাড়ে ৪০০ প্রকল্পে প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দের সিংহ ভাগই অর্থ কাজ না করেই পকেটস্থ করেছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও কেশবপুরের সাবেক সংসদ শহীন চাকলাদার। এসব প্রকল্প গুলোর কাগজে কলমে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে সমুদয় টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রনালয়, কেশবপুর উপজেলার গ্রামীন অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪৫০টি প্রকল্পে, প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এরমধ্যে প্রত্যেকটি টিআর প্রকল্পের জন্য ৫২ হাজার টাকা, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পে ১ লাখ টাকা থেকে ৩/৪ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয় বলে জানা যায়। এসময় আ.লীগ নেতা, তৎকালীন কেশবপুরের সাবেক সাংসদ দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী শাহীন চাকলাদার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তার পকেটের লোক দিয়ে প্রত্যেকটি প্রকল্প কমিটি কওে, এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ওবাইদুর মাষ্টারের বাড়ি থেকে বাওড় হয়ে ইয়াছিনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট ও সংস্কারসহ একাধিক প্রকল্প। স্থানীয়রা জানান , এই রাস্তায় কোন রকম মাটি ফেলে ও রাস্তা চেঁচে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। তবে এই প্রকল্পে কতটাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা ওই প্রকল্প কমিটির সভাপতি জানেন না বলে তিনি প্রতিনিধি কে জানান। সূত্র জানায়, এসময় কয়েকটি প্রকল্পে নামে মাত্র কাজ করে এসব প্রকল্পের সিংহ ভাগ অর্থই আ.লীগ নেতা শাহীন চাকলাদার হাতিয়ে নিয়েছেন। এদিকে টিআর প্রকল্পে মসজিদ মন্দিরসহ ধর্মীয় প্রতিষ্টান ৫২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হলেও ওইসব প্রকল্প কমিটিকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দিয়ে ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের মাধ্যমে জোর করে প্রকল্প বাস্তবায়ন পত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়েছে বলে একাধিক প্রকল্প কমিটির সভাপতি এই প্রতিনিধিকে জানান। এছাড়া কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে গ্রামীন সড়কে ইটের সোলিং নির্মাণ ও রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজসহ বিভিন্ন প্রকল্প। উপজেলা পিআইও অফিসে গিয়ে ওইসব প্রকল্পের তথ্য চাইলে কর্মকর্তারা তথ্য দিতে অপাকতা প্রকাশ করেন।

তারা জানান, গত ৪ আগষ্ট উপজেলা পরিষদে অগ্নি সংযোগের ফলে অফিসের সকল ফাইল পত্র পুড়ে গেছে, তাই পূর্বের কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। এদিকে বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে বাস্তবায়ন করা কয়েকটি প্রকল্পে যেয়ে দেখা যায় এসব প্রকল্পের কোন অসিত্ব নেই। নামেমাত্র কাগজে কলমে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এলাকাবাসী তদন্ত পূর্বক এসব প্রকল্পের স্থান গুলো চিহ্নিত করে এরসাথে জড়িত সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।

কারিকরপাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রশিদ বলেন, তার প্রকল্পে  ২২০০ মিটার কাচারাস্তায় মাটি ভরাট ও সংস্কারের জন্য কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়, তা তিনি জানেন না। তবে ওই একতে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি পেয়েছেন মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ওই টাকা তাকে দিয়েছেন যশোরের কাশিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী সাগর। এসময় তার কাছ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন ফর্মে তিনি জোর করে স্বাক্ষরও করিয়ে নেন তিনি।

একাধিক প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সাবেক এমপি শাহীন চাকলাদার তাদের নামে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন ফর্মে তাদের কাছ থেকে সহি স্বাক্ষর করে নিয়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শাহীন চাকলাদার এমপি থাকাকালে তিনি পিআইও অফিসে আংশিক দায়িত্বে ছিলেন। এসময় সরকারের নেয়া সকল প্রকল্প সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং উপজেলা পরিষদে অগ্নি সংযোগের ফলে অফিসের সকল নথিপত্র পুড়ে যাওয়ায় প্রকল্পের সঠিক তথ্য তার কাছে নেই বলে তিনি জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে তিনি কেশবপুরে কর্মরত ছিলেন না। এসময় প্রমীন উন্নয়নে যদি কোন দুর্নীতি হয়ে থাকে তা খতিয়ে দেখা হবে।


নিউজটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/