দুর্যোগের ডিজির পিএ কামালের অঢেল টাকার সম্পত্তি!

Reporter Name / ৫৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী কামাল হোসেন দুর্নীতির মাধ্যমে শতকোটি টাকা এবং বিপুল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন। তার বিরুদ্ধে টেন্ডার নিয়ন্ত্রন, নিয়োগে তদ্বিরবাজি এবং ঘুষ বানিজ্যেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, তার ছোট ভাই জেলখাটা অপরাধীকে সরকারি চাকুরি প্রদান, বোন ভগ্নিপতিসহ ঘনিষ্টজনদের নামে প্লট ফ্ল্যাট নিয়েছেন। নামে বেনামে ত্রাণ অনুবিভাগের কম্বল, ঢেউটিন, শুকনা খাবার ও বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছে রেইট কোড ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তিনি ফ্যাসিষ্ট সরকারের মন্ত্রী আমলা ও রাজনৈতিকবিদদের তোষামোদ করেই আজ কোটিপতি। তার বিরুদ্ধে গোপনীয় তদন্ত করলেই তার সকল অপকর্মের তথ্য পাওয়া যাবে।
অভিযোগ রয়েছে, কম্পিউটার অপারেটর মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারীর লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছেন। অধিদপ্তরের গাড়ি ভাড়ার টেন্ডারে এম এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ মাসুদ রানা গ-২১/১৩, মহাখালী, ঢাকা এর বৈধভাবে কাজ পাওয়ার পরও সুকৌশলে ফাইল আটকিয়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে কার্যাদেশ প্রদান করেন। এম এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক প্রথম মাসের বিল জমা দিলে এই দুর্নীতিবাজ কামাল হোসেন হুমকি দিয়ে বলেন, প্রতি মাসের বিলে ১০ হাজার টাকা না দিলে টেন্ডার বাতিলসহ প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মচারী বলেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে ২০২১ সালে কর্মচারি নিয়োগে কামাল হোসেন তার আপন ছোট ভাই (রবিন) কে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার জন্য মোটা টাকায় অন্যজনকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়ে উত্তীর্ণ করায়। পরবর্তীতে নিয়োগ বোর্ডের মৌখিক পরীক্ষায় তার ছোট ভাই (রবিন) অংশগ্রহণ করলে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যগণ ভূয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে বুঝতে পেরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ছোট ভাই (রবিন) স্বীকারোক্তি দেয় যে, তার ভাই কামাল হোসেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পাওয়ার জন্য সকল ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যগণ একমত হয়ে গত ১৩-০২-২০২২ তারিখে বনানী থানায় এজাহার দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।

উল্লেখ্য, জনাব মোঃ কামাল হোসেন মহাপরিচালক মহোদয়কে মিথ্যা বলে তার সেই জেলখাটা ছোট ভাই (রবিন) যার মামলা অধিদপ্তরই বাদী সেই সত্যতা গোপন করে তাকে (রবিন) ০৭-০৩-২০২৩ তারিখে অত্র অধিদপ্তরাধীন সেতু/কালভার্ট শীর্ষক নির্মাণ প্রকল্পে কার্যসহকারী হিসাবে চাকুরি পাইয়ে দেন। পরবর্তীতে নিয়োগ জালিয়াতি মামলার আসামী রবিনকে শিক্ষা ভবন, আব্দুল গণি রোড, ঢাকাতে অফিস সহায়ক পদে চাকুরি পাইয়ে দেন। জানা যায় রবিন বর্তমানে মধুপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত আছে।

শুধু তাই নয়, এই দুর্নীতিবাজ কর্মচারি কামাল হোসেন, ত্রাণ অনুবিভাগের কম্বল, ঢেউটিন, শুকনা খাবার ও বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছে রেইট কোড ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি মধুপুর, টাঙ্গাইলে কোটি টাকার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, দোকান, মার্কেট ও ফিসারিজ ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। এছাড়া ঢাকায় উদয়া ম্যানশন, পূর্বাঞ্চল মেইনরোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। লিংক গার্ডেন, মেরুল বাড্ডা, ঢাকাতে তার স্ত্রীর নামে ১টি ফ্ল্যাট, তার শ্বশুরের নামে ১টি, শ্বাশুড়ির নামে ১টি, বড় বোনের নামে ১টি ও বড় বোনের স্বামীর নামে ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এছাড়াও ঢাকায় নামে-বেনামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট ক্রয় করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এছাড়া কামাল হোসেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ার সুবাদে মহাপরিচালকের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকজনের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের কাছ থেকে নিয়োগ. বদলি ও বিভিন্ন অজুহাতে টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ সকল অন্যায় ও দুর্নীতি দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছেন। এত অন্যায় ও অবৈধ/অনৈতিক কাজের প্রমানসহ অভিযোগ থাকার পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এবিষয়ে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে কামাল হোসেন বলেন, অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মচারী তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এ ধরনের অপপ্রচার ও অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। এসকল তথ্য সঠিক নয়, তাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার প্রয়াস মাত্র।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/