শিরোনাম
সুন্দরবনে অস্ত্র গুলিসহ জলদস্যু বাহিনীর দুই সহযোগী আটক, দুই জেলে উদ্ধার গাইবান্ধায় পদোন্নতিপ্রাপ্ত তিন পুলিশ সদস্যের  র‍্যাংক ব্যাজ পরিধান বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর দাবি গল্লামারী ব্রিজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে জর্ডানে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা – দৈনিক গনমুক্তি গাজায় একদিনে আরও ৪৪ জনকে হত্যা ইসরায়েলের পেশা ছেড়ে দিচ্ছে লবণচাষীরা – দৈনিক গনমুক্তি ঝিনাইদহে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা, লুটপাট ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ ঘোষণার বাস্তবায়নের দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন বগুড়ায় নুর আলম হত্যা মামলার আসামি বার্মিজ চাকুসহ গ্রেপ্তার সোনাইমুড়ীতে প্রবাসীর বিধবা স্ত্রীর ৮০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

গোদাগাড়ীতে প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, বিচারে বড় বাধা বিএনপি নেতারা

Reporter Name / ১৬ Time View
Update : শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫


রাজশাহী ব্যুরো

  • আপডেট সময় :
    ০১:০৭:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫




    ২৬

    বার পড়া হয়েছে

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News)
ফিডটি

” মামলার পর কাটগড়াতে গেলে আমার সহি লাগবে,  কার্ডের জন্য আমার সহি লাগবে, কথা না শুনলে তুমি আমার কাছে কিছু পাবে না, কেউ কিছু দিবে না। এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রভাবিত করে মাত্র ৮০ হাজার টাকায় প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষনের সমাধানের চেষ্টা করেন গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ৩ নং পাকড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম। বিএনপি নেতার উপর এমন অভিযোগ তুলেছেন ধর্ষনের শিকার হওয়া প্রতিবন্ধী শিশুর মা। গণমাধ্যমের সামনে কঠিন আকুতি নিয়ে কথা বলছিলেন ধর্ষনের শিকার হওয়া প্রতিবন্ধী শিশুর মা মরিয়ম বেওয়া (ছদ্মনাম, সমাজিক সম্মানের স্বার্থে গোপন করা হলো)। জোর-জবরদস্তি করে হাতে দেওয়া হয়ে ১০ হাজার টাকা। ঘটনাটি গোদাগাড়ী উপজেলার ৩ নং পাকড়ি ইউনিয়নের পাকড়ি দক্ষিনপাড়া এলাকার। এমন অন্যায় বিচার মানতে না পেরে ঐ এলাকা থেকে সাংবাদিকদের জানান এক জৈনক ব্যক্তি। পরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় এমন এক গর্হিত ঘটনা।

এলাকাবাসি জানান,  প্রায় ২ বছর পূর্বে স্বামী মারা গেছে। রেখে গেছেন ৪ টি কণ্যা সন্তান। এর মধ্যে বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছে প্রতিবন্ধীসহ দুই শিশু। এই শিশুদের ভরনপোষণ যোগাতে মা মরিয়মকে মানুষের দুয়ারে কাজে যেতে হয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাশের বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে (শিশুটির চাচাতো ভাই) কাউসার বাড়িতে প্রবেশ করে ১৪ বছরের সেই প্রতিবন্ধী শিশুকে জোরজবরদস্তি ধর্ষন করে। শিশুটি চিৎকার করতে গেলেও মুখ চেপে ধরে ভয়ভীতি দেখায় সেই নরপিশাচ কাউসার। এরপর সেই প্রতিবন্ধী শিশুকে খাওয়ানো হয়েছে জন্মবিরতিকরণ পিল।

বিষয়টি নিয়ে ভিক্টিমের মা মরিয়মের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ (সোমবার) কাজের কারনে বাইরে যেতে হয় মা মরিয়মকে। যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কয়েকজন মহিলাদের জানিয়েছেন। যেন তার প্রতিবন্ধী শিশুটিকে দেখে রাখেন। মরিয়ম যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর কয়েকজন খোঁজ খবর নিতে গেলে ঘর থেকে তেমন কোন সাড়াশব্দ পাইনি। পরে শিশুটির দাদী বাড়িতে গেলে সেই প্রতিবন্ধী শিশুটি দাদীকে জানায় কাউসারের অপকর্মের কথা। এরপর এই অপরাধের বিচার চাইতে স্থানীয় মান্নান মেম্বারের বাড়িতে যান দাদী। কিন্তু মেম্বার বাড়িতে না থাকায় বিচারের আশ্বাস দেয় মেম্বার পত্নি। পরে মান্নান মেম্বার জানতে পেরে ভুক্তভোগীর বাড়িতে যান এবং পুরো ঘটনা শিশুটির মুখ থেকে শোনেন। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে কাজ করে ধর্ষক কাউসার ও পিতা আবুল কাশেম। শিশুটির মা আইনের কাছে যেতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পাকড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আনারুল ইসলাম।  এর সাথে যুক্ত ছিলেন ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি সুলতান। তাদের চাপাচাপিতে সমাধানে বসতে বাধ্য করা হয়। অবশেষে গত ১৯ মার্চ সমাধানের জন্য বসা হয় এবং ৮০ হাজার টাকায় রফাদফা করা হয়। ততক্ষনাৎ হাতে দেওয়া ১০ হাজার টাকা। এমন সমাধানে আপত্তি জানায় ভিক্টিমের মা মরিয়ম বেওয়া। তার দাবী আমি ধর্ষনের বিচার চাই, আমি টাকা চাইনা। বিচারের দাবী করতেই ভয় দেখায় বিএনপি নেতা আনারুল ও সুলতান। এসময় আনারুল বলে, মামলার পর কাটগড়াতে গেলে আমার সহি লাগবে,  কার্ডের জন্য আমার সহি লাগবে, কথা না শুনলে তুমি আমার কাছে কিছু পাবে না, কেউ কিছু দিবে না। যা দিচ্ছি মেনে নাও। বলে নগদ ১০ হাজার টাকা হাতে গুঁজে দেওয়া হয়। বাঁকীটা পরে পেয়ে যাবে বলে বৈঠক শেষ করেন। এতে পুরো হতাশ হয়ে পড়েন ভিক্টিমের মা মরিয়ম বেওয়া। আইনের দারস্থ হলে ভিক্টিমের পরিবারের ক্ষতি করা হবে মর্মে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে ধর্ষকের পরিবার ও সমাধানকারিরা। ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিকরা এলাকায় খোঁজ খবর নিতে গেলেও বাধা প্রদানের চেষ্টা করেন সমাধানকারিরা। পরে সাংবাদিকরা ধর্ষক কাউসারের বাসায় গেলে তারা সটকে পড়েন। ভিক্টিমের পরিবার জানায়, তাদের ভয়ে মামলা বা আইনের দারস্থ হতে পারছে না। কারন ওদের পেছনে বিএনপি নেতা আনারুল রয়েছে।

এমন অভিযোগের ব্যাপারে গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পাকড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে কিছু জানিনা। আমি এই ধরনের কোন বিচার সালিশে থাকিনা।  আপনাকে কেউ বললে তা ভুল বলেছে। ঠিক আছে ভাই ভাল থাকবেন বলে ফোন রেখে দেন।

পরে ঘটনার আদ্যপ্রান্ত নিয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সাথে। তিনি প্রতিবেদককে জানান, এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা জানা ছিলনা। আমি এখনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। এব্যাপারে পুরো জিরো টলারেন্স হয়ে কাজ করবে প্রশাসন। নির্ভয়ে ভিক্টিমের পরিবারকে থানায় যেতে বলেন আমি থানায় বলে দিচ্ছি। কেউ প্রভাবিত করতে চাইলে তারও সমস্যা হবে।

বি:দ্র: প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।  আসামী গ্রেফতার ও নায্য বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।


নিউজটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/