ডেস্ক রিপোর্ট
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News) ফিডটি
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার ভিত সমূলে নাড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর বৈশ্বিক শুল্কারোপ। এতে পুঁজিবাজারগুলোয় শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে। গত সোমবার বিশ্বের প্রধান প্রধান পুঁজিবাজারে হোঁচট খেয়েছে শেয়ার দর। এ পর্যন্ত টানা তিনদিনে বৈশ্বিক পুঁজিবাজার হারিয়েছে ৯.৫ লাখ কোটি ডলারের শেয়ারমূল্য। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল ট্রাম্প নতুন এই পাল্টা শুল্কের সিদ্ধান্ত থেকে শেষ পর্যন্ত সরে আসবেন, কিন্তু তা হয়নি। ফলে হাতে রাখা শেয়ার বিক্রির প্রবণতায় বাজারমূল্যেও নেমেছে ধস।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর সমন্বিত সূচক এসঅ্যান্ডপি ফিউচার্স ৩% লোকসানের ইঙ্গিত দিয়েছে। এসঅ্যান্ডপি সূচকের ভিত্তিতে বাজার অস্থিতিশীলতার পূর্বাভাস দেওয়া ভিক্স সূচক ৫০ পয়েন্টের উপরে অবস্থান করছে, যা সামনে বড় অস্থিরতাকে নির্দেশ করে। এই ধস থেকে রক্ষা পায়নি ইউরোপের বাজারও। ইউরোপীয় পুঁজিবাজারের সার্বিক সূচক স্টক্স ৬০০ পতন হয়েছে ৫%। এছাড়া ২০০৮ সালের পরে সোমবার সবচেয়ে বড় পতন দেখেছে এশিয়ার পুঁজিবাজার। তবে পুঁজিবাজারের বদলে ট্রেজারি ও জাপানের মুদ্রা ইয়েনে বেশি বিনিয়োগ করেছেন এশিয়ায় বিনিয়োগকারীরা, যে কারণে এ দুইয়ের মূল্যে উত্থান হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত রোববার এয়ারফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ সময় ইঙ্গিত দেন, বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে যে কোটি কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে, তাতে তার কিছু আসে যায় না।
ট্রাম্প বলেন, আমি চাই না কোনো কিছুতে ধস নামুক। তবে মাঝেমধ্যে কিছু জিনিস ঠিক করার জন্য আপনাকে ওষুধ নিতে হয়…আপাতত আপনারা পুঁজিবাজারকে ভুলে যান। বিএনপি পারিবাস ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এর মুখ্য বিনিয়োগ কৌশলবিদ স্তেফান কেম্পার বলেন, “মনে হচ্ছে বাজার এখন বিক্রির দিকে ঝুঁকছে। ‘আগে বিক্রি করো, পরে প্রশ্ন কর’-আপাতত এমন মনোভাবই বিরাজ করছে। ট্রাম্প যাই বলুন না কেন, বিশ্ব পুঁজিবাজার শেয়ার বিক্রির চাপে নুয়ে পড়েছে। এমনকি অ্যাপল ইনকর্পোরেশন, অ্যামাজন ডটকম ইনকর্পোরেশন ও সিটি গ্রুপ ইনকর্পোরেশনের মতো জায়ান্টদের শেয়ারদর পতন হয়েছে প্রায় ৫%।
জার্মানির ডিএএক্স সূচক কিছু সময়ের জন্য ১০%-এর মতো বড় পতন লক্ষ্য করলেও পরে তার কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। চলতি বছরে সেরা পারফর্ম করা শেয়ারগুলোও বিক্রির চাপে পড়েছে, কারণ লাভে এগুলো বিক্রি করে পুঁজি নগদে উঠিয়ে নেন বিনিয়োগকারীরা। হংকংয়ের হাংসেং সূচকের ১৩% পতন হয়েছে। অন্যদিকে কিছু সময়ের জন্য শেয়ার বিক্রয়াদেশ বন্ধ রাখতে হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাজারে।
এদিকে মন্দা দেখা দিলে পুঁজিবাজারের পতন আরও গভীর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বাজার কৌশলবিদরা। এর মধ্যেই মার্কিন বাজারের প্রভাবশালী পূর্বাভাস দাতা ওপেনহাইমার অ্যান্ড কোম্পানির বিশেষজ্ঞরা এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এর জন্য তাদের এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা বড় আকারে হ্রাস করে ৫ হাজার ৯৫০ পয়েন্টে নামিয়েছে। আগে সংস্থাটি ৭ হাজার ১০০ পয়েন্ট পূর্বাভাস দিয়েছিল সূচকটির। গত বুধবার ট্রাম্প তার নতুন পাল্টা শুল্কের ঘোষণা দেন। এতে মন্দা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কেও তাকে হুঁশিয়ারি দেন অর্থনীতিবিদরা। ট্রাম্প সমর্থক বিল অ্যাকম্যানের মতো হেজ ফান্ড ব্যবস্থাপকরাও এর সমালোচনা করেন। তবু সপ্তাহান্তে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তে অটল থাকারই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
https://slotbet.online/