আমিনুল হক ভূইয়া
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News) ফিডটি
ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্মরণকালের গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট আয়োজিত মার্চ ফর গাজা কর্মসূচির মঞ্চ থেকে ঘোষণাপত্রে ইসরাইলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করার মার্চ ফর গাজা মঞ্চ থেকে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে এর প্রতিবাদে ডাকা মার্চ ফর গাজা কর্মসূচি গণজমায়েতের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লাখ জনতার উপস্থিতিতে গাজাবাসীর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে ঘোষণাপত্র পাঠ শেষে মোনাজাতের মাধ্যমে এই কর্মসূচি সম্পন্ন হয়। সবার পক্ষে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এরপর বিকাল জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেকের মোনাজাতের মাধ্যমে এই কর্মসূচি সম্পন্ন হয়। এর আগে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বিখ্যাত কারী আহমদ বিন ইউসুফের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এই কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশের আয়োজনে এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আব্দুল মালেক। এ ছাড়া গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানানো হয়। এর পাশাপাশি এতে উঠে আসে সারা বিশ্বে মুসলিমদের ওপর আগ্রাসন ও ওআইসিসহ মুসলিম নেতাদের নির্লিপ্ততার কথা। ঘোষণাপত্রে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করা হয়। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে এক্সেপ্ট ইসরায়েল শব্দটি পুনরায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। ইসরায়েল ও এর সমর্থকদের পণ্য বয়কটেরও আহ্বান জানানো হয়। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আজ আমরা, বাংলাদেশের জনতা—যারা জুলুমের ইতিহাস জানি, প্রতিবাদের চেতনা ধারণ করি—সমবেত হয়েছি গাজার শহীদদের পাশে দাঁড়াতে। আজকের এই সমাবেশ কেবল প্রতিবাদ নয়, এটি ইতিহাসের সামনে দেওয়া আমাদের জবাব, একটি অঙ্গীকার, একটি শপথ। শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত কর্মসূচির মূল মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি ফিলিস্তিনের সমর্থনে এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণাপত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানানো হয়। আয়োজনে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষ ইসরাইলের বর্বরতা রুখে দিতে বিশ্ব মুসলিমকে এক হওয়ার আহ্বান জানান। নির্যাতিত ফিলিস্তিনের জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেকের নেতৃত্ব মোনাজাত হওয়ার কথা হয়। এর আগে মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট বড় মিছিল আসতে থাকে সোহরওয়ার্দী উদ্যানে। সেখানে নানা বয়সের মানুষ অংশ নেয়। থেকে নানা বয়সি মানুষ ছোট-বড় মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একত্রিত হয়। এ কর্মসূচিতে এক হয়েছে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও নানান ধর্ম-বর্ণের মানুষ। ইতিহাস সৃষ্টি করে করে শুধু ফিলিস্তিনের জন্য এক মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এছাড়া শিল্পী, কবি, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় মুখও যোগ দিয়েছেন কর্মসূচিতে। দলমত নির্বিশেষে এক কাতারে সবাই যোগ দিয়ে ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে সাহসী উচ্চারণ করছেন। একই সঙ্গে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুসহ এর পেছনের কুশীলবদের বিচারের আওতায় আনতে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানান সমাবেশে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশ নিতে হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভিড় করেছেন। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সোহরাওয়র্দী উদ্যানে জড়ো হচ্ছেন। শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা, মৎসভবন, দোয়েল চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষ দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বদিকে একটি স্টেজ করা হয়েছে। স্টেজের সামনে কিছু আসন রাখা হয়েছে। এরপর সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে অবস্থান করছেন। ফিলিস্তিনের পতাকা এবং বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। তাদের অনেকেই নিজের মাথায় ফিলিস্তিনের পতাকা বেধেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্ট দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা জনতা মিছিল করছেন। মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, এবি পার্টি, খেলাফতে মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশে অংশ নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সমাবেশে যোগ দেন। এছাড়াও ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী ও শায়খ আহমদুল্লাহ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন, নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাদিক কায়েম, মুফতি হারুন ইজহার, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ কাশফি, মুফতি দেলোয়ার হোসাইন, মাহমুদুল হাসান সোহাগ, ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও উপস্থাপক আর যে কিবরিয়া একাধিক বিশিষ্টজন ও পরিচিতজন এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সংহতি জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু), খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ।
https://slotbet.online/