বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় কেটেছে দুই যুগ

Reporter Name / ১ Time View
Update : বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫


হালিম মোহাম্মদ

  • আপডেট সময় :
    ১২:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫




    ২১

    বার পড়া হয়েছে

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News)
ফিডটি

  • রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার রায় যে কোনো দিন

  • সাক্ষী অনুপস্থিত আটকে আছে বিস্ফোরক মামলার বিচার

রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনার দুই যুগ অতিবাহিত হয়েছে। এ নারকীয় ঘটনার দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ। মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন হাইকোর্ট। চলতি মাসের শেষের দিকে রায় ঘোষনার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আলোচিত এ মামলার রায় যে কোনো দিন ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। ২০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ মাসের মধ্যেই আদালত রায় ঘোষণা করবেন। আশা করি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। এ মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে আসামি আরিফ হাসান সুমন, মুফতি আবদুল হাইয়ের পক্ষের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ বলেন, ‘বিচারিক আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন তা কোনোভাবেই সাজার জন্য যথেষ্ট নয়। এই সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে শুধু জনতুষ্টির জন্য আসামিদের সাজা দিলে তা হবে ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।
আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদ- অনুমোদন) ও আপিলের ওপর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ হয়। মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছেন হাইকোর্ট। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ ১৪০৮ বঙ্গাব্দ) ভোরে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয়। পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওইদিন বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলাকালে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি ও অন্য বোমাটি বিস্ফোরিত হয় ১০টা ১৫ মিনিটের পর।
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নৃশংস ওই বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। এতে আহত হন আরও অনেকে। এ ঘটনায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে ওইদিনই রমনা থানার পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি মামলা করে।
এ সংক্রান্ত মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। কারাগারে থাকা দন্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে শুনানি শুরু হয়। ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যে কোনো দিন রায় ঘোষণা হবে।
রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রায় দেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদন্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়। মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত ব্যক্তিরা হলেন আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান।
তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদন্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দন্ডিত ব্যক্তিরা হলেন- শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদন্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দন্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়।
বোমা হামলার ওই ঘটনায় করা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। কারাগারে থাকা আসামিরা আলাদা আপিল ও জেল আপিল করেন। হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে। শুনানিও শুরু হয়। পরে কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে আলোচিত এ মামলায় আট আসামির ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার পর্যায়ে রাখা হয়।


নিউজটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/