আওয়ামী আর্শিবাদপুষ্ট আটাবে চরম অস্থিরতা

Reporter Name / ২৪ Time View
Update : সোমবার, ১২ মে, ২০২৫


গণমুক্তি রিপোর্ট

  • আপডেট সময় :
    ০৮:৪০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫






    বার পড়া হয়েছে

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News)
ফিডটি

টিকেট সিন্ডিকেটের হোতা সভাপতি-সম্পাদক

শেখ হাসিনার পতনের নয় মাসেও বিমান টিকেট বিক্রেতা এজেন্সি মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর শীর্ষ নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসেনি। সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্ত্বসাৎ ও লুটপাট এবং টিকেট সিন্ডিকেট, বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে সেখানে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানালেও রহস্যজনক কারণে এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রনালয় থেকে তাদেরকে শোকজ নোটিশ’ দেওয়ার পর নিয়মিত অফিসে না আসায় সংগঠনের দাফতরিক কর্মকান্ড চরমভাবে ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি অনেকটা অভিভাবকহীন অবস্থায় চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে আটাব সূত্রে জানা গেছে।
আটাব সূত্র জানায়, পতিত সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আটাবের বর্তমান সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ-এর নেতৃত্বাধীন বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে সেখানে দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ করে পরবর্তী কার্যক্রম চালাতে তিন দফা দাবিতে গত এপ্রিল মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন আটাব সংস্কার পরিষদ। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর আটাব কমিটি বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করে আটাবকে কলঙ্কমুক্তকরণের পাশাপাশি বিতর্কিত নেতাদের দ্রুত গ্রেফতারের জোর দাবি জানান তারা।
কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আটাবের বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিব দিব্যি পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করে আটাব সংস্কার পরিষদের নেতারা। গত ১৮ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত এমন অভিযোগ দেন। একই দিন তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট আওয়ামী লীগের আর্শিবাদপুষ্ট বর্তমান আটাব কমিটি বাতিল করে আটাবকে কলঙ্কমুক্তকরণের পাশাপাশি বিতর্কিত নেতাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে তারা আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগী আটাব কমিটিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করার দাবি জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) ও টাস্কফোর্সের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত ২২ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা ‘কেন বর্তমান আটাব কমিটিকে বাদ দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হবে না’ মর্মে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে। কমিটিকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিব অনেকটাই বেকায়দায় পড়ে যান। তারা নৈতিক শক্তি হারিয়ে আটাব অফিসে অনিয়মিতভাবে আসা যাওয়া করেন।
আটাব সূত্র জানায়, শোকজ নোটিশ জারি হওয়ার পর মাঝখানে সভাপতি ও মহাসচিব আটাব অফিসে নিয়মিত না এসে তারা মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে উঠেপড়ে লাগেন। ফলে আটাব কার্যালয়ের নিয়মিত কর্মকান্ডে স্থবিরতা নেমে আসে।
অভিযোগ রয়েছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত আটাব সভাপতি আবদুস সালাম আরেফের বিরুদ্ধে কোনো ট্রাভেল এজেন্সি এমনকি কোনো এয়ারলাইন্স কোনো কথা বলার সাহস পেত না। এয়ারলাইন্সগুলো তার অনৈতিক টিকিট গ্রুপ ব্লকিংয়ের কাজে সহযোগিতা করতে বাধ্য হয়েছিল। নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়দানকারী এয়ার স্পিড লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বর্তমান আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বিভিন্ন এয়ার লাইন্সের টিকিট গ্রুপ বুকিংয়ের মাধ্যমে ব্লক করে এয়ার স্পিড নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে প্রচার করেন এবং চড়া দামে বিক্রি করে থাকেন। ২০২৩-২৪ সালে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীদের (লেবার) টিকিটের গ্রুপ ব্লকিং এবং ২০২৫ সালে সউদীগামী (লেবার) টিকিট ব্লকিংয়ের মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধি করে বিক্রি করেছেন। এখন আওয়ামীপন্থি আটাব সভাপতি নিজের অপকর্ম ঢাকতে এবং বর্তমান সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য ট্রাভেল এজেন্সি এবং এয়ার লাইন্সের মধ্যে বিরোধ তৈরি করে এয়ার টিকিট ব্যবসায় নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে এদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
মন্ত্রণালয়ে দেওয়া অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা বাহাউদ্দিন নাসিমের আত্মীয় পরিচয়ে এবং প্রশাসনের সহায়তায় ২০১১ সাল থেকে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন দিয়ে দুবার মহাসচিব এবং বর্তমান সভাপতি হিসেব আটাব দখল করে আছেন। ভূয়া ভোটার তালিকা, কেন্দ্র দখল, জাল ভোট এবং প্রতিপক্ষকে কেন্দ্র থেকে বের দিয়ে স্বঘোষিত ফলাফল নিয়ে বারবার নির্বাচিত হয়ে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেছেন। জুলাই-আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে গণ-আন্দোলন হয়েছিল তা প্রতিহত করার জন্য দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে ৩ আগস্ট ২০২৪ যে ষড়যন্ত্রমূলক সভাটি করেছিলেন সেখানে বর্তমান আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা প্রয়াত মুহায়মিন সালেহ-এর কন্যা আফসিয়া জান্নাত সালেহ তার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ নেত্রী পরিচয়ে আটাব নেতৃত্বে আসেন এবং নিয়ম রক্ষার নির্বাচনে একাধিকবার নির্বাচিত হয়ে কমিটির সবাইকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন।জনাব মহাইমিন সালেহ ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। আটাব মহাসচিব আফসিয়ার চাচা আওয়মীলীগের মনোনয়ন নিয়ে বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আফসিয়ার শ্বশুর জনাব বাবুল জয়দেবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আটাব সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক মো. গোফরান চৌধুরী বলেন, আটাব সভাপতি ও মহাসচিব তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে আটাব অনলাইন বিলুপ্ত ঘোষণা করে নামে বেনামে চেকের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, আটাবের বর্তমান সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ্ আওয়ামী লীগপন্থি এবং তারা বিভিন্নভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন বলে আমরা তাদের বিচার চাই। আটাব সভাপতি গ্রুপ টিকেটের নামে ব্লক করে চড়া দামে টিকেট বিক্রয়ের প্রমান থাকা সত্বেও কোন এক অজানা কারনে সরকারের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি । এসব বিষয়ে জানতে আটাব সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ’র মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেস্টা করে পাওয়া যায়নি।


নিউজটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/