ফ্যাসিস্টের চার দেয়ালে আটকে রেখে কেড়ে নিয়েছে একযুগ

Reporter Name / ১ Time View
Update : বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫


আমিনুল হক ভূইয়া

  • আপডেট সময় :
    ১০:৪০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫




    ১৯

    বার পড়া হয়েছে

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News)
ফিডটি

ফ্যাসিস্টের অত্যাচার-নীপিড়নের স্টিম রোলার থেকে বাদ যায়নি ছাত্র, শিক্ষক, ভিন্ন মতের রাজনৈতিক কর্মী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সমাজ। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন কতটা চরম ও লোমহর্ষক হতে পারে তার প্রমাণ মেলে মিথ্যা মামলায় বিনাবিচারে কারাগারে নিক্ষেপ, আজগুবি মামলায় ইচ্ছে মাফিক তুলে নিয়ে গুম, ক্রসফায়ার, বছরের পর বছর আয়না ঘরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো। গতবছরের ৫ আগস্টের পর কথিত আয়না ঘর (টর্চার সেল) জনসমুখে প্রকাশের মধ্য দিয়ে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়ি থেকে তুলে এনে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অকথ্য নির্যাতন চালানো। আবাক কান্ড হচ্ছে, দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) টর্চার সেল রয়েছে! যেখানে মিথ্যা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় হেফাজতে নিয়ে তাদের ওপর চালানো হতো অবর্ণনীয় অত্যাচার! দুদকে টর্চার সেল কখন ভাবা যায়? দিনের পর দিন হেফাজতে রেখে নির্যাতন চালিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে আটক ব্যবসায়ীর ব্যক্তির ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। ফ্যাসিস্টের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংগঠিত গুন্ডাবাহিনীর মতো কতটা নির্দয় হতে পারে, যা কিনা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে ফ্যাসিস্টের সহযোগী দুদকের লোমহর্ষক অত্যাচারের বর্ণনা তুলে ধরেন ডেসটিনির প্রতিষ্ঠাতা ড. রফিকুল আমীন। এই উদ্যোক্তা বলেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার। ড. আমীন বিনিয়োগ সৃষ্টির অন্যতম কারিগর। তার নেতৃত্বে ডেসটিনি চালুর পর দেশজুড়ে ৪৩ লাখ বিয়োগকারীর এক বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। সততা ও পরিশ্রমকে সঙ্গী করে লাখ লাখ মানুষ সৎভাবে জীবন-যাপন করেছেন। চালুর কয়েক মাস যেতে না যেতেই দেখা যায় বিয়োগকারী লম্বা মিছিল। যা কিনা স্বাধীন বাংলাদেশে নজির সৃষ্টি করেছে। পরিবেশবান্ধব ডেসটিনির এই উত্থানকে মেনে নিতে পারেনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। ড. আমীনকে সাজানো মামলায় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের অজুহাতে দিনের পর দিন দুদকের হেফাজতে রেখে তার ওপর চালানো হয় মানুষিক নির্যাতন। মিথ্যা স্বীকারোমূলক কাগজে স্বাক্ষর নিতে ব্যর্থ হয়ে মানুষের ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতন। মিথ্যা মামলা কেন বলছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. রফিকুল আমীন বলেন, তাকে মামলায় জড়িনো হয়, ফ্যাসিস্টের স্বার্থচরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে। আমাকে পরিবারসহ দেশের বাইরে চলে যাবার প্রস্তাব দিয়েছিলো দুধক। কিন্তু আমি দেশ ছেড়ে কিছুতেই যাবো না এমন বক্তব্যে তারা খুশি হতে পারেনি। কোন প্রলোভনে পা দেইনি বলে আমার স্ত্রীকেও মামলায় জড়ানো হয়। দুদক আপদমস্তক দুর্নীতি পরায়ণ সংস্থা। দুদকে টর্চাস সেলে থাকতে পারে তা আমাদের ধারণা ছিলো না। আমি সেখানে বন্দি থেকে তা দেখেছি। দুধকের টর্চার সেলে নির্যাতনের কি নেই। দেশের গত মঙ্গলের জন্য রাজনীতি করবো। দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে মিট দ্য রিপোর্টার্স আয়োজনে যুক্ত হওয়া রফিকুল আমীন আরও বলেন, মিথ্যা মানিলন্ডারিন মামলায় আমাকে ১২ বছরের করাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলায় সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় এক যুগ পর কারামুক্ত হন। ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলায় রফিকুল আমীনসহ কোম্পানির ১৯ জনকে ১২ বছর করে কারাদন্ডের রায় দেয় হয়। কারাদন্ডের পাশাপাশি তাদেরকে ৪ হাজার ৫১৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫৪ টাকা অর্থদন্ডও দেওয়া হয়। রায়ের পর ১২ বছর পূর্ণ হওয়ায় তারা মুক্তিলাভ করেছেন। কিন্তু রফিকুল আমীনের স্ত্রী ফারহা দিবার সাজার ১২ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তিনি কারাগারা রয়েছেন। অথচ ফারহা দিবা ডেসটিনির একজন শেয়ার হোল্ডার মাত্র।
সময়টা ২০২২ সালের ১২ মে। রফিকুল আমিন ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদসহ ৪৬ আসামিকে অর্থপাচার মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয় আদালত। এরমধ্যে রফিকুল আমিনকে ১২ বছর এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদকে ৪ বছর কারাদন্ড দেন আদালত। সাজার মেয়াদ শেষে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মুক্তিলাভ করেন ড. আমীন। মিট দ্য রিপোর্টার্স আয়োজনে ডেসটিনি প্রতিষ্ঠা, বিশাল বিয়োগের পরিবেশ তৈরি এবং নিজের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আমজনগন পার্টি সম্পর্কে কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অত্যন্ত সাবলিলভাবে। রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা নিয়ে ড. আমীন বলেন, সমাজের অসঙ্গিত, দুর্নীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শুশাসন এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার প্রধান মাধ্যম হিসাবে কাজ করবে বাংলাদেশ আমজনগণ মঞ্চ। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তার নজির গড়ে বিদায় নিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার। যে বদনাম বাংলাদেশের রাজনীতিকে কুলশিত করেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমজনগন পার্টির মঞ্চ থেকে দুর্নীতিবাজ সংস্থা দুদকের মুখোশ দেশবাসীর সামনে উন্মোচন করা হবে। তার বিশ্বাস নিজের প্রতিষ্ঠিত আমজনগন পার্টি মানুষকে সত্যের আলোকিত পথ দেখাবে।

 


নিউজটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/