মরুতে পরিণত হচ্ছে উত্তরাঞ্চল – দৈনিক গনমুক্তি

Reporter Name / ৩৩ Time View
Update : রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫


হালিম মোহাম্মদ

  • আপডেট সময় :
    ১২:৫১:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫






    বার পড়া হয়েছে

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News)
ফিডটি

  • ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের মরন ফাঁদ

  • শুকিয়ে প্রাণ হারাচ্ছে প্রমত্তা পদ্মা

ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে মরে যাচ্ছে প্রমত্তা পদ্মা নদী, মরুভুমিতে পরিণত হচ্ছে উত্তরাঞ্চল। পরিবেশ বিপর্যয়ে হুমকির মুখে পড়েছে রাজশাহী অঞ্চলের লাখো মানুষ। নদীর গতি প্রবাহে স্বাভাবিকতা না থাকায় ভাঙন বা বালুচরে স্থানান্তর হচ্ছে পদ্মাপারের মানুষ। ফারাক্কা বাঁধ তো নয়, এযেন বাঙ্গালীর মরন ফাঁদ। এমন অবস্থায় ভারত থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আরও কৌশলী হবার পরামর্শ পানি বিশেষজ্ঞদের।
পানি বিশেষজ্ঞরা কবির ভাষায় বলেন, আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে। পার হয়ে যায় গরু পার হয় গাড়ি। দুই ধার উঁচু তার ঢালু তার পাড়ি। নাব্য হারিয়ে প্রমত্ত পদ্মা রাজশাহীতে যেন রবিঠাকুরের কবিতার এই ছোট নদীতে রূপ নিয়েছে। এমন পরিণতির শঙ্কা থেকেই ৫০ বছর আগে ১৬ মে ব্যারেজ বন্ধে কানসাট অভিমুখে লংমার্চ করেন মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
প্রয়াত মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি সাংবাদিক মামুন স্ট্যালিন বলেন, আমার নানা লোকজনকে সংঘবদ্ধ করে ফারাক্কা লংমার্চের ব্যবস্থা করেন। এবং বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন লং মার্চ করে। যে আজকের কৃষক, বাংলার চাষি, বাংলার মানুষ বঞ্চিত হবে যদি পানি প্রবাহ ঠিক না থাকে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ বিভাগের ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ-২৩’ শীর্ষক এ গবেষণায় উঠে আসে পদ্মার গতিময়তা হারানোর আরো স্পষ্ট চিত্র। এতে ১৯৭৫’র পর নদীতে পানির প্রবাহ, নদীর গভীরতা, অববাহিকায় বৃষ্টিপাত, শুষ্ক মৌসুমে নাব্য ও মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণির বিপন্নতার তথ্য উঠে আসে।
এবিষয়ে মুঠোফোনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু হানিফ শেখ বলেন, ফারাক্কা নামক জায়গায় ভারত বাধ স্বাভাবিক চলার পথটা বন্ধ করে দেয়।
নদী গবেষক মাহাবুব সিদ্দিকী মুঠোফোনে বলেন, ফারাক্কা একটা চলমান নদী তাকে বাধা দেয়া যাবে না। তার মিনিমাম ৮০ শতাংশ পানি প্রবাহমান থাকতে হবে। তাহলে সে নদী সচল থাকবে। এ অবস্থা আরও প্রকট হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী ঘেঁষা উজানের ৭০ কিলোমিটারে। দু’পারের বাসিন্দাদের কাছে যা একেবারেই অচেনা।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, ফারাক্কা থেকে পানি আসে না, নদী হবে কই থেকে। আরেকজন জানান, আগে বড় বড় ঢেউ ছিল। এখন নদীই তো নাই। ভারতের ফারাক্কা বাঁধ হয়ে এ’পথ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে পদ্মা নদী। এ বাঁধ দিয়ে কখনো অতিরিক্ত পানি ছাড়বার কারণে ভাঙ্গন হয়েছে পদ্মায় তাতে তলিয়ে গেছে পদ্মাপারের মানুষের বসতভিটা, চাষবাসের বিস্তীর্ণ মাঠ পড়েছে বালি। তাতে পরিচিত পেশা বদলে সর্বশান্ত হয়ে ন্থানান্তর হয়েছে পদ্মা পাড়ের মানুষ।
১৯৭৭ সালে গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির পর ১৯৯৬ সালে ৩০ বছরের জন্য পানি বণ্টন চুক্তি আছে ভারতের সাথে। যেখানে প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ১০ দিন পরপর ৩৫ হাজার কিউসেক পানি ভাগের কথা। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশের মানুষ। তাহলে কি পেয়েছে বাংলাদেশ? আগামী বছর শেষ হবে এই চুক্তি। এমন অবস্থায় কী কৌশল নেয়া উচিত? এমন প্রশ্ন রাজশাহীবাসির।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান সজল বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ভারত ও বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম দেশ। কিন্তু বরাবরই আমাদের চাহিদার বিষয়টি নিরুপণ করে টেবিল বসবো সেটা বসতে পারি নাই। খরস্রোতা প্রমত্ত পদ্মার নাব্য সংকটে শাখা নদীগুলোও মৃতপ্রায়। এতে বাংলাদেশ হারিয়েছে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার নদীপথ। ফারাক্কার বাঁধের কারনে মরুভুমিতে পরিনত হচ্ছে রাজশাহীর বিস্তুর্ন এলাকা। সে এলাকার মানুষ সর্বশান্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহে অন্ত্র চলে যাচ্ছে।


নিউজটি শেয়ার করুন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/