[ad_1]
আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে বান্দাকে অবশ্যই রবের হুকুম-আহকাম পরিপূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে। আল্লাহ ও তার রাসুলের (সা.) আনুগত্য ছাড়া আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য হলো আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার চেষ্টা করা। যেসব গুণাবলি অর্জন করলে মহান আল্লাহ খুশি ও সন্তুষ্ট হন সেসব গুণে নিজেকে সাজানো। জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা। প্রকাশ্য ও গোপনীয় সব ধরনের পাপের কাজ আল্লাহর ভয়ে পরিত্যাগ করা। এ জাতীয় গুণে গুণান্বিত মানুষ আল্লাহর প্রিয় হয়। আল্লাহর প্রিয় হওয়া মানে তার সন্তুষ্টি অর্জন করা।
আসুন জেনে নেয়া যাক মহান রাব্বুল আল আমীনের কিছু পছন্দনীয় আমল সমুহ:
আল্লাহকে ভালোবাসা
অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্ব এনেছেন, প্রতিকূল ও অনুকূল পরিস্থিতিতে তিনি আমাকে লালন-পালন করেন, প্রতিনিয়ত যাঁর হাজারো নিয়ামত আমি ভোগ করি—তিনি আমার রব, তিনি আমার আল্লাহ। তাঁর বিধি-বিধান মানা ও তাঁর হুকুমমতো জীবন পরিচালনা করার মাঝেই সবার কল্যাণ। মুমিন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা তার আনুগত্য ও অনুসরণের পথকে সুগম করে দেয়।
আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে। (হে নবী, মানুষকে) বলে দাও, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবেসে থাকো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
তাওবা করা
মানুষ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক গুনাহ করে। দৃঢ়সংকল্প থাকা সত্ত্বেও শয়তান অনেক সময় আমাদের ধোঁকা দিয়ে থাকে। কিন্তু বান্দা যখন তার ভুল বুঝতে পারে, তার ভেতর অনুশোচনা ও অনুতপ্ত জাগ্রত হয়, এক আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, তখন আল্লাহ তাআলা অত্যন্ত খুশি হন। এবং আল্লাহ তাআলা বান্দার এ তাওবাকে কবুল করেন। আল্লাহ তাআলা বান্দার তাওবার মাধ্যমে তার যাবতীয় পাপ মোচন করে দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো খাঁটি তাওবা, আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত। নবী ও তাঁর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদের সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৮)
বিপদে ধৈর্য ধারণ করা
দুনিয়াতে আল্লাহ তায়ালা মাঝেমধ্যে বান্দাকে ছোট-বড় বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। প্রকৃত মুমিন এসব বিপদাপদে ধৈর্য ধারণ করে। কারণ আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীল বান্দাদের ভালোবাসেন।
কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের প্রশংসা করেছেন। এ জন্য যেকোনো বিপদাপদে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে পূর্ণ ধৈর্য ধারণ করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবে না, করলে তোমরা সাহস হারাবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৪৬)
আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকা
মনের বিরুদ্ধে কোনো কিছু হলেই অনেক সময় আমরা আজেবাজে মন্তব্য করে বসি। যা আমাদের পরবর্তী সময়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর সিদ্ধান্তের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো বান্দা মুমিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত না সে তাকদির ও তার ভালো-মন্দের ওপর ঈমান আনবে। এমনকি তার নিশ্চিত বিশ্বাস থাকতে হবে যে যা কিছু ঘটেছে তা কিছুতেই অঘটিত থাকত না এবং যা কিছু ঘটেনি তা কখনো তাকে স্পর্শ করবে না। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২১৪৪)
চোখের হেফাজত করা
এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। -সূরা নুর: ৩০
এখানে চোখের হেফাজত বলতে বুঝানো হয়েছে, কোনো অবৈধ জিনিস দেখা, যা আল্লাহ ও তার নবী (সা.) নিষেধ করেছেন- তা না দেখা। এসব থেকে বিরত থাকা।
জবানের হেফাজত
মুখ দিয়ে কোনো প্রকার খারাপ কথাবার্তা না বলা। ঝগড়া-বিবাদ, গালাগালি, পরনিন্দা কিংবা গিবত করা থেকে বিরত থাকা। বর্তমান সময়ে তো পরচর্চা করা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এটা ভয়াবহ কবিরা গোনাহ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা একে নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতো জঘন্য কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং কঠোরভাবে এ থেকে মুসলমানদের বিরত থাকতে আদেশ দিয়েছেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এক হাদিসে ইরশাদ করেন, মিরাজের সময় আমাকে এমন সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো- যাদের নখ ছিল তামার। তারা তাদের মুখমণ্ডল ও দেহ আঁচড়াচ্ছিল। আমি জিবরাইলকে (আ.) জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা তাদের ভাইদের গিবত করত ও ইজ্জতহানী করতো। -মাজহারি
আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘গিবত ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক গোনাহ। গিবত ইসলামি শরিয়ত মতে হারাম।
অন্তরের হেফাজত
অন্তরের হেফাজত তথা নীরবে-নিভৃতেও কোনো প্রকারের মন্দ কল্পনা করা বৈধ নয়। তেমনি কারো সম্পর্কে মন্দ ধারণা করাও কবিরা গোনাহ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মুমিনগণ! তোমরা ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ এবং গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না। ’ -সূরা হুজুরাত : ১২
এ জন্য অন্তরে যেকোনো ধরনের কুচিন্তা ও মন্দ ধারণা থেকে বিরত থাকতে হবে।
[ad_2]
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ আব্দুল লতিফ
প্রধান সম্পাদকঃ এম এস এন মাসুক হিমেল
সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ হাউজ ২৪, রোড ৩, মনিপুরি পাড়া, ফার্মগেট ঢাকা।
আঞ্চলিক কার্যালয়ঃ ৭ মতি কমপ্লেক্স রোড চকবাজার চট্টগ্রাম
মোবাইলঃ ০১৯৯৪৪২২৭৮৯
ই-মেইলঃ news@dainikprovhatersangbad.com