জামালপুর শহরের মধ্য দিয়ে বংশ খাল মিশেছে ব্রহ্মপুত্র নদে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও পয়োনিষ্কাশনের জন্য একসময় বংশ খালটি ভূমিকা রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু দখল-দূষণে এই খালটি এখন ড্রেনে পরিণত হয়েছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতে শহরে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। খালের ময়লা অপসারণ করে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে সংযুক্ত এই বংশ খাল। বছরের পর বছর দখল করতে করতে খালটি সংকীর্ণ করে ফেলেছিল লোকজন। ২০০৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বংশ খাল কিছুটা দখলমুক্ত করা হয়েছিল। ওই সময় খালের তলদেশ আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে পানিপ্রবাহের জন্য ড্রেনের মতো তৈরি করা হয়। শহরের ড্রেনের ময়লা পানি, বর্ষার পানি অপসারণ ও পয়োনিষ্কাশনের জন্য বংশ খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই খালের সঙ্গে শহরের সব ড্রেনের সংযোগ রয়েছে। ড্রেনের পানিপ্রবাহ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু সেই খালটি গত কয়েক বছরে ময়লার ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের কালীঘাট থেকে মালগুদাম পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বংশ খালটির দুই পাশে গাইড ওয়াল (ইটের দেওয়াল) নির্মাণ করা হয়েছে। খালটির কোথাও তিন মিটার আবার কোথাও আড়াই মিটার প্রশস্ত। খালের দুই পাশেই গড়ে উঠেছে বাসাবাড়ি, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকসহ বড় বড় দালান। এসব স্থাপনার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় বংশ খালে। ময়লা-আবর্জনার ওপর মশা ও মাছি ভরা। খালটি যেন এখন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়।
এস কে সোহেল নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘অনেক বছর ধরে দেখছি এই খাল ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। খালটি একেবারেই ছোট জামালপুর শহরের দয়াময়ী মোড় এলাকার বংশ খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়৷
তাও আবার ময়লা-আবর্জনা ভরে যাওয়াই পানি তেমন একটা দ্রুত নামে না। বৃষ্টির সময় পানি বেড়ে আরো দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। তা ছাড়া তো মশা-মাছির অভাব নেই এই জায়গায়।’
শহরের দয়াময়ী এলাকার বংশ খালের পারের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে না কেউ। খালের আশপাশের লোকজন সবাই এসে খালের ওপরেই ময়লা ফেলে চলে যান। খালের পানির তো স্রোত নেই যে ময়লা-আবর্জনা স্রোতে চলে যাবে। পানি একেবারে কালো কুচকুচে হয়ে গেছে। খাল থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।’
জামালপুর নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. ইউসুফ আলী বলেন, ‘ভরাট আর দখল হতে হতে এখন বংশ খাল তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং তিন মিটার প্রস্থ অবয়ব নিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে। খালটি পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। কিন্তু গত ১০ বছরেও এই খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জামালপুর পৌর প্রশাসক মৌসুমি খানম বলেন , ‘বংশ খাল পুরোপুরি পরিষ্কার শুরু করবো৷ তবে পৌরসভার শ্রমিক দিয়ে যতটুকু করা যায় সাধ্যমতো তা করা হচ্ছে।
https://slotbet.online/