ববিতে নিয়ম না মেনেই গাছ কাটায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

Reporter Name / ২ Time View
Update : শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫


বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে গিয়ে কিছুদিন পরপরই গাছ কাটা হচ্ছে। এতে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, বারবার গাছ কাটার পরিবর্তে মাটির নিচ দিয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড) বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করে একটি স্থায়ী সমাধানের কথা।

শুক্রবার (২৩ মে) ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ লাইনের সংলগ্ন গাছের বড় বড় ডাল কেটে ফেলা হয়। কিছু গাছের কাঠামো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, এগুলো প্রায় ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় পৌঁছে গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, গাছের ডাল কাটার নামে নির্বিচারে গাছ ধ্বংস করা হচ্ছে। এতে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে। তাছাড়া গাছ কাটার পদ্ধতিতেও অনভিজ্ঞতা ও খামখেয়ালি লক্ষ্য করা গেছে। তারা বলেন, অদক্ষ ও অবহেলাপূর্ণভাবে গাছের ডাল কাটা হচ্ছে, যার ফলে গাছগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী উৎপল সরকার বলেন, “এভাবে গাছ কেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখলে ভবিষ্যতে আমরা হয়তো বিদ্যুৎ পাব, কিন্তু হারাবো আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ। তাই স্থায়ী সমাধান ছাড়া এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

আরেক শিক্ষার্থী মাধব পাল গাছ কাটার ধরন নিয়ে বলেন, “বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য গাছের ডাল কাটা দরকার, এটা ঠিক। কিন্তু যেভাবে কাটা হচ্ছে, তা একেবারেই অদক্ষভাবে। যেখানে কাটছে, তার দুই-তিন হাত পর্যন্ত ঢাল থেতলানো ও ফেটে যাচ্ছে। এতে বৃষ্টির পানি ঢুকে কাঠামো পচে যাবে এবং পিপড়াও সেই ফাটল দিয়ে গাছের ভেতর ঢুকে ক্ষতি করবে। ডাল কাটার কোনো নিয়মই মানা হচ্ছে না।”

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাছগুলোর মোটা শাখা কেটে ফেলা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে সব ডালপালাই কেটে দেওয়া হয়েছে। এসব কাজের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা ও পরিকল্পনার অভাব স্পষ্ট।

বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন ‘বরিশাল ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি’ তাদের ফেসবুক পেইজে এক বিবৃতিতে জানায়, “পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গাছের ডাল কাটার নামে গাছ নিধন কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। ক্যাম্পাস অপরিকল্পিতভাবে সাজানোর কারণে গাছগুলো সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত আন্ডারগ্রাউন্ড তার স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটা।”

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন মাঠে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘বরিশাল ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট কনজারভেশন সোসাইটি’। তারা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মুরশীদ আবেদীন বলেন, “গাছের ডালপালার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকায় ডাল কাটা হয়েছে। তবে আন্ডারগ্রাউন্ড তার স্থাপন করা গেলে ভবিষ্যতে আর গাছ কাটার প্রয়োজন হবে না। পরবর্তী ফিজিবিলিটি স্টাডির সময় এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং পরবর্তী প্রকল্পে এটি বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, “আন্ডারগ্রাউন্ড তার স্থাপন একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এটি সময়সাপেক্ষ এবং বিভিন্ন অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিচ্ছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/