কুড়িগ্রাম পৌরসভাকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে বহুমুখী উদ্যোগ

Reporter Name / ৪০ Time View
Update : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫


কুড়িগ্রাম পৌরসভাকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানার সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় পৌরসভায় শুরু হয়েছে নানামুখী উন্নয়ন কার্যক্রম। ২৭.২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌর শহরটিকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে ড্রেন সংস্কার ও নতুন ড্রেন নির্মাণে নেওয়া হয়েছে সময়োপযোগী পরিকল্পনা।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত কুড়িগ্রাম পৌরসভায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নির্মিত হয়েছে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ড্রেন। কিন্তু এসব ড্রেনের অধিকাংশই এখন ভঙ্গুর ও অকেজো অবস্থায় রয়েছে। নিয়মিত সংস্কার না করায় এবং অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে পৌরবাসীকে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, বিষয়টি জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই অর্থে সার্কিট হাউজ থেকে টিটিসি মোড়, কলেজ মোড় থেকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস পর্যন্ত (সরকারি মহিলা কলেজ হয়ে), এবং পলিটেকনিক কলেজ মোড় থেকে বালাটারী রেললাইন পর্যন্ত ১.৩২৮ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ০.৭৭৮ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ এবং ০.৫৫০ কিলোমিটার পুরাতন ড্রেন সংস্কার করা হবে। এই কাজগুলো সম্পন্ন হতে সময় লাগবে আনুমানিক ছয় মাস।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ভবিষ্যতে আরও প্রায় ২০ কোটি টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, “রংপুর বিভাগের ৯ পৌরসভার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প” এর আওতায় কুড়িগ্রাম পৌরসভার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পৌরসভার ড্রেন, সড়ক এবং বাজার উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুন্নবী জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ড্রেন উন্নয়নের কাজ শুরু হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা পৌরসভার ড্রেন সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি এবং ধাপে ধাপে সবকিছু বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, “আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ড্রেনের ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা। এগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।”

পৌরসভার প্রশাসক মো. আসাদুজ্জামান জানান, “ডিসি স্যারের সঙ্গে আমরা সভা করেছি। সেখানে জলাবদ্ধতা ও ড্রেন সমস্যা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।”

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা
জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, “আমি নিজে গভীর রাতে পৌর এলাকায় ঘুরে ঘুরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। সমস্যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার কাজ শুরু হলে পৌরবাসী দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে বলে আমি আশাবাদী।”

এই উদ্যোগ সফল হলে কুড়িগ্রাম পৌরবাসী পাবে একটি জলাবদ্ধতামুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য শহর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/