পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দৈনিক ৬০ টাকার কর্মচারীর ঘুষ বাণিজ্য

Reporter Name / ৬৭ Time View
Update : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫


রাজধানীর তেজগাঁও সাব-রেজিস্ট্রার কমপ্লেক্সের আওতাধীন পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের বিস্তৃত অভিযোগ উঠেছে। মাত্র ৬০ টাকা দৈনিক মজুরিতে নিয়োজিত কয়েকজন ক্লার্ক—যাদের স্থানীয়রা ‘উমেদার গোষ্ঠী’ নামে চেনেন—তারা গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। দলিল নিবন্ধন ও জমি সংক্রান্ত সেবা নিতে এসে হাজার হাজার টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় একাধিক সূত্র ও তদন্তকারী একটি সংস্থা জানিয়েছে, উমেদার জসিম, মুসলিম, রাজীব প্রমুখ দীর্ঘদিন ধরে একই অফিসে থেকে ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার করে এমন এক দুর্নীতিবাজ চক্র গড়ে তুলেছেন, যা অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রমকেই পঙ্গু করে ফেলেছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত ঘুষ না দিলে কোনো ফাইল নড়াচড়া করে না। এমনকি একটি সাধারণ দলিল তৈরির জন্যও ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাবি করা হয়।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, “আমরা বাধ্য হয়েই টাকা দিই, না হলে কাজ আটকে যায়।” তারা আরও বলেন, এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই নিশ্চুপ রয়েছে, যার ফলে দুর্নীতি দিন দিন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

বিশেষভাবে অভিযুক্ত উমেদার পরিচয়দানকারী মুসলিম নামে একজন ব্যক্তি গত ৭–৮ বছর ধরে কোনো বৈধ নিয়োগ ছাড়াই প্রভাব খাটিয়ে ওই পদে বহাল রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, তিনি সাবেক সরকার দলীয় প্রভাব ব্যবহার করে নিয়োগপ্রাপ্ত পিয়ন তানিয়া বেগমকে অফিসের কাজ থেকে সরিয়ে রেখে নিজেই পুরো অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

অভিযোগ আরও রয়েছে, নকলনবিশ অফিসের রেকর্ড রুমের সংরক্ষণ থেকে শুরু করে নকল দলিল তৈরি, জালিয়াতি এবং টাকার বিনিময়ে সেবা বিক্রির সবকিছুতেই জড়িত এই উমেদার সিন্ডিকেট।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুসলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটি মহল আমাকে হেয় করতে উঠেপড়ে লেগেছে।”

পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রার জাহিদুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

স্থানীয়দের দাবি, এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে সরকারি সেবা এখন সাধারণ নাগরিকের নাগালের বাইরে চলে গেছে। তারা দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, “এই দুর্নীতিবাজ চক্রকে ভেঙে সঠিক তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/