সিলেটের ওসমানীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শেখ মাসুক মিয়া (৩৫) হত্যা মামলায় চার ভাইসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৭ মে) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন।
নিহত মাসুক মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার ফতেহপুর গুপ্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত শেখ মদরিছ আলীর ছেলে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিহত মাসুকের ভাই শেখ আলফু মিয়া (৪১), শেখ পংকী মিয়া (৪৩), শেখ তোতা মিয়া (৫৭), শেখ আব্দুর রব ওরফে লেবু মিয়া (৬৩), শেখ পংকী মিয়ার স্ত্রী লাভলী বেগম, লেবু মিয়ার শেখ আনোয়ারা বেগম (৪৮), একই গ্রামের মৃত আখলাছ আলীর ছেলে ফখর উদ্দিন ওরফে অহর (৪৬) ও গ্রামতলা দাসপাড়া গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন ওরফে দিপু মিয়া (৪৩)। তাদের মধ্যে দিপু মিয়া ছাড়া সবাই আদালতে রায় ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকেলে মাসুক মিয়া গোয়ালাবাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। সারা রাতেও তিনি ফিরে না আসায় তার স্ত্রী মোবাইল ফোনে কল করেন। প্রথমে কল সচল থাকলেও কিছু সময় পর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন ১৪ জুন ওসমানীনগরের দাসপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেতে স্থানীয়রা একটি ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে মাইকিংয়ের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হলে নিহতের ভাই আলফু ও তোতা মিয়া গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
প্রথমে আলফু মিয়া অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। কিন্তু তদন্তে বেরিয়ে আসে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন নিহতের আত্মীয়স্বজনরাই। তদন্তের একপর্যায়ে আলফু, পংকী ও তোতা মিয়াকে আটক করে পুলিশ। পরে এসআই মমিনুল ইসলাম আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন এবং তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি আল আসলাম মুমিন জানান, প্রবাসে থাকা অবস্থায় মাসুক মিয়া নিয়মিত তার ভাইদের কাছে টাকা পাঠাতেন। সেই অর্থ দিয়ে ভাইয়েরা নিজেদের নামে জমি কিনে নেন। দেশে ফিরে মাসুক জমি নিজের নামে লিখে দিতে চাইলে বিরোধ শুরু হয়। এর জেরেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়।
এই রায়ের মাধ্যমে মাসুক হত্যার দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার অবসান হলো। তবে নিহতের পরিবার দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছে।
https://slotbet.online/