পাচারের শিকার ৩৬ শিশু-কিশোরকে ফেরত দিলো ভারত

Reporter Name / ৪৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫


ভারতে পাচারের শিকার হয়ে আটক ৩৬ বাংলাদেশি শিশু-কিশোরকে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তাদের বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্টে হস্তান্তর করা হয়।

ফেরতপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জন নারী এবং ২১ জন পুরুষ রয়েছে। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। অনেকেই সেখানে দুই বছর থেকে শুরু করে আট বছর পর্যন্ত আটক ছিলেন।

ফেরতের সময় উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি, বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকর্তারা।

ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- যশোরের আপন চন্দ্র সিংহ, আসমা খাতুন; রাজশাহীর আসমাউল হোসেন; নোয়াখালীর বিউটি রাণী দেবনাথ; খুলনার রহমত আলী, জিয়াউর রহমান, রাখি সানা, আয়াত মোল্লা, রিমি মোল্লা; মুন্সিগঞ্জের তহমিনা আক্তার; বাগেরহাটের শাকিল হাওলাদার; গোপালগঞ্জের সম্রাট গুপ্ত, আকাশ হক; কুড়িগ্রামের শাহিনুর আলম, হানিফ আলী; নাটোরের দেবজিৎ রায়; দিনাজপুরের রাসেল বাবু, ফারিয়া খান; সাতক্ষীরার ইব্রাহিম; ময়মনসিংহের সফর শেখ; নড়াইলের আব্দুস সবুর; কক্সবাজারের আল আমিন, সালমা; ঢাকার সাজেদা ইয়াসমিন মুন্নি, জোহরা বেগম; নেত্রকোনার নাজমা খাতুন; রংপুরের ধিমান বারুই; মাদারিপুরের শ্রাবণ হোসেন, মিলি আক্তার; নরসিংদীর রিফাত হোসেন; ঠাকুরগাঁওয়ের রিদয় রায়; লক্ষ্মীপুরের সুমাইয়া আক্তার; চট্টগ্রামের নিঝুম দে; ঝালকাঠির সিথি রায় এবং পঞ্চগড়ের প্রিয়ন্তি রায়।
ফেরতপ্রাপ্তদের তাৎক্ষণিক আইনি সহায়তা দিতে বেনাপোল সীমান্তেই দায়িত্ব নেয় চারটি বেসরকারি সংস্থা—জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, রাইটস ও মানব উদ্ধার শিশু সুরক্ষা সংস্থা।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশকালে তারা ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়। পরবর্তীতে তাদের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হোমে রাখা হয়।

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা ইয়াহিয়া মেম্বার জানান, তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচার করা হয়। মেয়েকে আনতে তিনি নিজেই বেনাপোলে ছুটে এসেছেন।

মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, “আমাদের তথ্য অনুযায়ী ভারতে পাচার হওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। আজ যারা ফিরেছে, তাদের মধ্যে ছয়জনকে আমরা পুলিশের কাছ থেকে গ্রহণ করেছি। অনেকে প্রেমের ফাঁদে পড়েছে, কেউ আবার কাজের লোভে প্রতারিত হয়ে গেছে। এরপর তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাধ্য করা হতো।”

তিনি আরও জানান, পাচারকৃতদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়, বাকিদের সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “ফেরতপ্রাপ্ত ৩৬ বাংলাদেশিকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/