শেরপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমি বিক্রি ও দলিল সম্পন্ন করতে এসে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সাবেক ভূমিমন্ত্রী মো. রেজাউল করিম হীরা (৮৩) ও তার স্ত্রী। মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিরাপত্তার স্বার্থে হেফাজতে নেয়।
শেরপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল করিম বলেন, সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখনও কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি যাতে সহিংস না হয়, সে কারণে তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রেজাউল করিম হীরা পাজেরো গাড়িতে করে স্ত্রীকে নিয়ে নিউমার্কেট এলাকার রেজিস্ট্রি অফিসে জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে আসেন। এ সময় ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিক দল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সেখানে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগান শুরু করেন। একপর্যায়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে হীরা দম্পতিকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়।
জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাশেম সিদ্দিকী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান উজ্জ্বল অভিযোগ করে বলেন, “মানুষের কাছ থেকে দখল করা জমি বিক্রি করতে আসেন সাবেক মন্ত্রী। তাই তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা তার শাস্তি দাবি করছি।”
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম সানি ও সদস্যসচিব নিয়ামুল হাসান আনন্দও একই দাবি জানান।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “সাবেক মন্ত্রী ও তার স্ত্রী প্রবীণ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি ব্যক্তিগত কারণে শেরপুরে এসেছিলেন। কোনো মামলা না থাকলেও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা নিরাপদে আছেন।”
হীরা প্রথম সংসদ নির্বাচন করেন ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে করলেও প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত হওয়া সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে পুনরায় বিএনপির সিরাজুল হককে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা গঠন করলে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করলে মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টি-জেপির বাবর আলী খানকে ১৯ হাজার ৩৪৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
১ মার্চ দশম সংসদের ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া দলীয় নির্দেশে প্রত্যাহার করে নেন।
https://slotbet.online/