কক্সবাজার সৈকতে অনিয়ন্ত্রিত প্যারাসেইলিং – Bangla Affairs

Reporter Name / ৫১ Time View
Update : বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫


কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের বিনোদনের জনপ্রিয় মাধ্যম প্যারাসেইলিং ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্যারাসেইলিং কর্তৃপক্ষের নিয়মনীতি উপেক্ষা, দায়িত্বহীনতা ও অবহেলার কারণে প্রতি বছরই পর্যটকরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

প্যারাসেইলিংয়ের মূল উপকরণ হলো দক্ষ জনবল, প্যারাসুট, রশি ও স্পিডবোট। এই যেকোনো উপকরণে ত্রুটি থাকলে দুর্ঘটনা ঘটে। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে প্যারাসেইলিং থেকে পড়ে গুরুতর আহত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

গত ২০ মে দুপুরে দরিয়ানগর সৈকতে একই সময়ে দুজন প্যারাসেইলিং করার সময় রশি ছিঁড়ে তাদের সমুদ্রের পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিজ ইনতেসার নাফি জানান, ওই দুই পর্যটক দম্পতি কোমর ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন। দুর্ঘটনার পর প্যারাসেইলিং পরিচালনা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফরিদ নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্যারাসেইলিং কেন্দ্র নিয়ম অমান্য করে একসঙ্গে দুজনকে নিয়ে প্যারাসেইলিং করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফি বলেন, ‘নিয়ম না মেনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে প্যারাসেইলিং পরিচালিত হচ্ছিল। তাই ‘ফ্লাই এয়ার সি’ নামের প্রতিষ্ঠানের প্যারাসেইলিং কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে এবং মালামাল জব্দ করা হয়েছে। তবে মালিক ও কর্মীরা পালিয়ে গেছে।’

কক্সবাজার সৈকতে অনিয়ন্ত্রিত প্যারাসেইলিং
কক্সবাজার সৈকতে অনিয়ন্ত্রিত প্যারাসেইলিং

কক্সবাজারের দরিয়ানগর, হিমছড়িসহ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বেসরকারি উদ্যোগে প্যারাসেইলিং চলছে। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক আকাশে উড়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

প্যারাসেইলিংয়ের টিকিট মূল্যের মধ্যে ২০০০ টাকা খরচ করলে ১০ মিনিট আকাশে ওড়া যায়। ২৫০০ টাকার টিকিটে আকাশে উড়ার সঙ্গে দুবার সমুদ্রের পানিতে পা ভেজানোর সুযোগ থাকে।

অভিজ্ঞ পর্যটক আফসান জ্যাবিন অদিতি জানান, গত বছর দরিয়ানগরে ‘ফ্লাই এয়ার সী স্পোর্টস প্যারাসেইলিং’ থেকে দড়ি ছিঁড়ে সমুদ্রে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তার পর থেকে আর প্যারাসেইলিং করতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, প্রশাসনের উচিত এই খাতের ওপর কঠোর নজরদারি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা।

স্থানীয়রা জানায়, প্যারাসেইলিংয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নিরাপত্তা, স্পিডবোটের উপযোগিতা, রশির গুণগত মানসহ সকল বিষয় জেলা প্রশাসনের তদারকি করা প্রয়োজন, কারণ প্যারাসেইলিংয়ের অনুমোদন জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দেয়া হয়।

প্যারাসেইলিং ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘শুরুর আগে সব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করি, তবুও কিছু অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনা হয়। আমরা বিষয়টি সংশোধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

এর আগে ২০২৪ সালের জুন মাসে একই স্থানে এক নারী পর্যটক গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনায় সাময়িকভাবে প্যারাসেইলিং বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কিছুদিন পর পুনরায় চালু হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/