বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায় আজ (বুধবার) ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। মামলার আরেক আসামি তারেক রহমান আপিল না করলেও, তাঁর খালাসের আবেদন করেছেন জোবাইদা রহমানের আইনজীবীরা।

বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে, গত সোমবার (২৬ মে) শুনানি শেষে ২৮ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।

শুনানিতে জোবাইদা রহমানের আইনজীবী এস এম শাহজাহান আদালতে বলেন, যথাযথ তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে বিচার করে তারেক রহমানকে ৯ বছর ও জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের সাজা দেওয়া হয়। যদিও সরকার নির্বাহী আদেশে পরে তাঁদের সাজার কার্যকারিতা এক বছরের জন্য স্থগিত করে। তবে আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশে ফিরে জোবাইদা রহমান আদালতের অনুমতি নিয়ে আপিল করেন।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার কাফরুল থানায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে তারেক রহমান, ডা. জোবাইদা রহমান এবং তাঁর মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান তারেক রহমানকে দু’টি ধারায় মোট ৯ বছর এবং ডা. জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন।

মামলায় দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল করিম। অপরদিকে, আপিলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবীরা এস এম শাহজাহান, কায়সার কামাল ও জাকির হোসেন ভূঁইয়া।

আইনজীবী শাহজাহান শুনানিতে দাবি করেন, মামলায় উল্লেখ করা সম্পত্তিগুলোর মধ্যে একটিও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত নয় এবং কোনো সম্পত্তিই দেশের বাইরে নেই। সেনানিবাসে অবস্থিত মইনুল রোডের বাড়িটি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারকে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, সেটিকেও মামলায় অবৈধ সম্পত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে। গুলশানের ৩৩ টাকার সরকারি বরাদ্দের বাড়িটিও একইভাবে মামলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

জোবাইদা রহমানের আপিলের প্রেক্ষিতে তারেক রহমানের খালাসের বিষয়েও আদালতের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তাঁরা বলেন, পূর্ববর্তী কয়েকটি মামলায় (যেমন—২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ইত্যাদি) তারেক রহমান আপিল না করলেও প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তাকে খালাস দেন। সে নজির অনুসরণ করে এ মামলাতেও একই সুবিধা প্রযোজ্য হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

গত ১৩ মে হাইকোর্ট ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করে জোবাইদা রহমানের আপিল গ্রহণ করে এবং ১৪ মে তাঁকে জামিন দেয় ও জরিমানা স্থগিত করে। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে দেশ ছাড়েন ডা. জোবাইদা রহমান। দীর্ঘ ১৭ বছর পর চলতি বছরের ৬ মে তিনি দেশে ফিরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং আইনি লড়াইয়ে অংশ নেন।