বান্দরবানে পাহাড় কাটায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে মো. নাজিম উদ্দিন নামে এক বিএনপি নেতাসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, নাজিম কোনো পাহাড়ই বাদ রাখেননি। পুরো এলাকায় ছোট-বড় পাহাড় কেটে সাবাড় করে ফেলেছেন তিনি। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক পাহাড় ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছেন এই নেতা। পাওয়ার গ্রিড নির্মাণের জন্য জায়গা ভরাট করতে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
বান্দরবানের বালাঘাটা চড়ুইপাড়া, বাকিছড়া, লেমুঝিড়ি, থোয়াইগ্যপাড়া—এলাকার বিভিন্ন স্থানে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। বেশ কয়েকদিন ধরেই সড়কের পাশ ও স্কুলের আশপাশ থেকে পাহাড় কেটে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে। পাহাড়জুড়ে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার চিহ্ন স্পষ্ট। ইতোমধ্যে হাজার ফুটের মতো পাহাড় বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে কেটে ফেলা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে এসব পাহাড় কাটা হচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছেন বালাঘাটা ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন, ২নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মনির, ফারুকসহ আরও অনেকে। সপ্তাহখানেক ধরে থোয়াইগ্যপাড়া, চড়ুইপাড়া, লেমুঝিড়ি ও বাকিছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের পাশ ঘেঁষেই চলছে এই কর্মকাণ্ড। কাটা মাটি বান্দরবান ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণের স্থানে ভরাট করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, থোয়াইগ্যপাড়া সড়কের পাশে পুকুর প্রকল্পের ভিতরে, স্কুলের পাশে, লেমুঝিড়ি সড়ক এবং চড়ুইপাড়া এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে ব্যাপকভাবে পাহাড় কাটা হয়েছে। হাজার ফুটেরও বেশি পাহাড় বিভিন্ন কোণ থেকে কেটে ফেলা হয়েছে, ফলে মাটি ধসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, নাজিম উদ্দিন নামে ওই বিএনপি নেতা স্কেভেটরের মাধ্যমে দিনে ও রাতে সমানতালে পাহাড় কাটছেন। প্রতিদিন ৭-৮টি ডাম্পার দিয়ে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে আরও ৩-৪ জন শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন বলেও জানান তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আলম, থুইক্য মারমাসহ আরও কয়েকজন বলেন, প্রতিদিন স্কেভেটরের মাধ্যমে পাহাড় কাটা হচ্ছে। সপ্তাহখানেক ধরে এই কাজ চলছে। এলাকাজুড়ে রাস্তা কাদা ও মাটিতে ভরে গেছে, যার ফলে চলাচলে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।
বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন স্বীকার করে বলেন, “যেসব স্থানে পাহাড় কাটা হচ্ছে, সব আমার সাইট। আপনারা পরিদর্শন করে চলে যান, যা বলার রাতে হবে।” মাটিগুলো কোথায় নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “বান্দরবান ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের জায়গা ভরাটের জন্য এসব মাটি নেওয়া হচ্ছে।”
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলার সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, “আমি চট্টগ্রামে থাকার সময় পাহাড় কাটার বিষয়ে শুনেছি। অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি বলেন, “পাহাড় কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।”
https://slotbet.online/