সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্ত চালিয়ে অভিযোগগুলোর সত্যতা পায় বলে নিশ্চিত করেছেন কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।
এর আগে সোমবার (২৬ মে) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা শিক্ষক শফিককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে অন্য শিক্ষকরা পরিস্থিতি সামাল দেন।
তদন্ত কমিটিতে ছিলেন বল্লী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মিজানুর রহমান (আহ্বায়ক), ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম রেজা মন্টু এবং বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, শিক্ষক শফিক দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর কথা বলা, স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া, এমনকি একজন ছাত্রীকে চুমু খাওয়ার অভিযোগ পর্যন্ত রয়েছে। পাশাপাশি চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়েও তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে তদন্ত চলাকালে তদন্ত কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সাইদুর রহমান জানান, ক্লাস চলাকালে আনোয়ার হোসেন কক্ষে ঢুকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মারধর করেন, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল।
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষককে ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলতে চান না।
তদন্ত কমিটির সদস্য সেলিম রেজা মন্টু জানান, শিক্ষক শফিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একাধিক প্রমাণ মিলেছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তদন্ত কার্যক্রম শেষে বৃহস্পতিবার লিখিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।
এদিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সহকারী শিক্ষা অফিসারকে বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির পাশাপাশি শিক্ষা অফিস থেকেও পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগের প্রমাণ মিললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
https://slotbet.online/