সুয়ালক-লামা সড়কটি যেন মরণফাঁদ – Bangla Affairs

Reporter Name / ৪৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫


দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সুয়ালক-লামা সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই সড়কটিতে চলছে ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন। লামা উপজেলায় যাতায়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এটি। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে মোটরবাইক, সিএনজি, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করলেও বর্ষা মৌসুম এলেই সড়কটি খুঁড়ে খুঁড়ে ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনা ঠেকাতে সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ তো নেয়াই হয় না, বরং এলজিইডি কর্তৃপক্ষ যেন চোখেই দেখেন না সড়কটির দুরবস্থা। ফলে এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সুয়ালক থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে টংকাবতী ইউনিয়নের সামনে সড়কটির ভাঙনের চিত্র দেখা যায়। সড়কটি কার্পেটিং করা হলেও মাত্র তিন বছরের মাথায় ভেঙে গেছে। প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ধসে পড়ে সড়কটি। ফলে সেই সড়কে চলাচলকারী মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। প্রায় তিন বছর ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে এখন এটি মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। তাছাড়া ভাঙা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকেন সাধারণ যাত্রীরা।

জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সুয়ালক-লামা সড়কটি বাস্তবায়ন করেছিল বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাস্তবায়নের পর নেওয়া হয়নি কোনো রক্ষণাবেক্ষণ বা সংস্কারের উদ্যোগ। ২০২৩ সালের টানা ভারী বর্ষণে সড়কটি ধসে পড়ে। এরপর কোনোভাবে যান চলাচলের উপযোগী রাখতে অস্থায়ীভাবে কিছু কাজ করা হলেও প্রতি বর্ষা মৌসুমেই সড়কটি আবার ভেঙে পড়ে।

সুয়ালক-লামা সড়কটি যেন মরণফাঁদ
সুয়ালক-লামা সড়কটি যেন মরণফাঁদ

স্থানীয়রা জানান, লামা-সুয়ালক সড়কের দুই বছর আগে কোটি টাকার বিনিময়ে কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু তিন বছরের মধ্যেই সড়কটির করুণ অবস্থা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন অংশ দেবে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এলজিইডি। ফলে এই সড়ক পুরোপুরি ধসে পড়লে লামা-সুয়ালক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেড় কিলোমিটার পর সড়কটি ধসে পড়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে মাটি সরে গিয়ে পুরো সড়কই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। একাধিকবার সংস্কার বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এলজিইডি সংশ্লিষ্টদের জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক মাত্র তিন বছরের মধ্যে ধসে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

টংকাবতী এলাকার বাসিন্দা তঙ্গয়ে ম্রো ও ট্রাকচালক জসিম বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চালাই। কখন দুর্ঘটনা ঘটে বলা যায় না, সবসময় আতঙ্ক নিয়ে চলতে হয়। সংশ্লিষ্টরা যদি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ভালো। না হলে এই বর্ষায় পুরো রাস্তা ধসে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।’

টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মায়াং ম্রো বলেন, ‘গত বছর থেকেই সড়কটি ভেঙে ভেঙে এখন বড় আকার ধারণ করেছে। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপজেলা অফিসকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখন আবার বর্ষা শুরু হয়েছে, যেকোনো সময় সড়কটি পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে।’

জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর বলেন, ‘এই সড়কের বিষয়ে আমি জানতাম না। তবে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরে আমি সাথে সাথে সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। দুই দিনের মধ্যে সড়কটি দেখে যেখানে যেখানে সংস্কার প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করে এলজিইডি প্রধান কার্যালয় থেকে বরাদ্দ চেয়ে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/