তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, স্পর্শকাতর তথ্য আদান-প্রদানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতেন সুব্রত। কীভাবে এই উচ্চ প্রযুক্তির ডিভাইস তাঁর হাতে এল, কতদিন ধরে তা ব্যবহার করছেন এবং কাদের সঙ্গে এই স্যাটালাইট ফোন ব্যবহার করে কথা বলেছেন? সে বিষয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজধানীতে ঘটে যাওয়া অন্তত তিনটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মধ্য বাড্ডায় বিএনপি নেতা সাধন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি সুব্রতের বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। তদন্তকারীরা স্যাটেলাইট ফোনটি কারা ব্যবহার করতেন এবং এর মাধ্যমে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ হতো, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ রাখার কথা স্বীকার করেছেন। সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।
বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন সুব্রত বাইনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলায় মোল্লা মাসুদ, শুটার এমএএস শরীফ ও আরাফাত ইবনে মাসুদের ছয় দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় থাকা সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ ‘সেভেন স্টার গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করতেন। তারা জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে পুনরায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হন।
আদালতে হাজির হয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে সুব্রত বাইন বলেন, “আপনারা ছবি নেন, ভিডিও নেন, কিন্তু হলুদ সাংবাদিকতা করবেন না। আমার নাম বিক্রি করে যারা চাঁদাবাজি করে, তাদের ধরেন। আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র রাখি।”
এ সময় সুব্রতের আইনজীবী দাবি করেন, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক প্রভাবে তাকে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ বানানো হয়েছে। তিনি জানান, সুব্রত তিনবার গ্রেপ্তার হয়েছেন, প্রতিবারই গণমাধ্যমের প্রভাবে। আয়নাঘরে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকার পর ৬ আগস্ট তাকে নরসিংদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে ঢাকা ও কুষ্টিয়া থেকে সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আসামিরা জানান, হাতিরঝিলে এমএএস শরীফের বাসায় তারা নিয়মিত বৈঠক করতেন এবং সেখানেই অস্ত্র ও সরঞ্জাম মজুত রাখা হতো। পরে ওই এলাকা থেকেই শরীফ ও তার সহযোগী আরাফাত ইবনে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
https://slotbet.online/