রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ, চাকরিচ্যুত ৪ হাজার শিক্ষক

Reporter Name / ৪৪ Time View
Update : বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫


তহবিল সংকটের কারণে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে (আরআরআরসি) লেখা এক চিঠিতে এই ঘোষণা দেয়।

এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৪ হাজার স্থানীয় (বাংলাদেশি) শিক্ষক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ১,২০০ শিক্ষককে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে উখিয়া ও টেকনাফে বিক্ষোভ করেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রমে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষক ছিলেন— যাদের মধ্যে ৪ হাজার রোহিঙ্গা এবং ৪ হাজার স্থানীয় বাংলাদেশি। ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় ইউনিসেফ দীর্ঘদিন ধরে এসব ক্যাম্পে “লার্নিং সেন্টার” চালিয়ে আসছিল, যা এখন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ইউনিসেফ কক্সবাজার ফিল্ড অফিসের প্রধান এনজেলা কার্নে এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “উখিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচালিত সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলো।”

এর আগে ২ জুন ইউনিসেফ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিল, তহবিল সংকটের কারণে ক্যাম্পের প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী ঝুঁকিতে রয়েছে এবং পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও শিক্ষকদের ধাপে ধাপে ছাঁটাই করা হবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১২৫০ স্থানীয় শিক্ষককে হঠাৎ চাকরিচ্যুতি
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১২৫০ স্থানীয় শিক্ষককে হঠাৎ চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে উখিয়াতে প্রতিবাদ

মঙ্গলবার সকাল থেকে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে অবরোধ শুরু করেন। ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও আশ্বাসে দুপুরে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষকরা।

উনচিপ্রাংয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষক মোহাম্মদ করিম বলেন, “রোহিঙ্গা শিক্ষকদের রেখে আমাদের স্থানীয় শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমরা আগেও আন্দোলন করেছি, কিন্তু চাকরি ফিরে পাইনি। তাই আবার আন্দোলনে নেমেছি।”

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেনের যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের বিষয়টি আমরা জেনেছি। এতে প্রায় ৪ হাজার স্থানীয় শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আজও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তারা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।”

আরআরআরসি কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন বলেন, “আমরা জাতিসংঘকে বারবার অনুরোধ করেছি যাতে তহবিল বাড়িয়ে শিক্ষকদের চাকরি পুনর্বহাল করা হয়। কিন্তু তার আগেই সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা এল।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/