[ad_1]
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগ তুলে এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাতে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে প্রতিবেশী রিপন আলীর বাড়ির ফ্রিজ থেকে মাংস চুরির অভিযোগ ওঠে ওই নারীর বিরুদ্ধে। এরপর রিপনের স্ত্রী তাকে ধরে বাড়ির উঠানে একটি পেয়ারা গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন এবং মাংস কেড়ে নেন। পরে স্বামী এসে তাকে বাড়ি নিয়ে যান।
তবে সেখানেই ঘটনা থেমে থাকেনি। রাত ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজন ওই নারীর বাড়িতে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে এবং গরু, ছাগল ও স্বর্ণালংকার লুট করে। পরে তাকে জোরপূর্বক আবার প্রতিবেশীর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় এবং মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে এক সালিশে গরু, ছাগল ও স্বর্ণালংকারের বিনিময়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, “আমি শুধু ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে ডাকতে গিয়েছিলাম। এরপর তার স্ত্রী আমাকে চোর সাজিয়ে গাছে বেঁধে মারধর করেন। পরে রাতে গ্রামের শতাধিক মানুষ এসে আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ফের মারধর করে, চুল কেটে দেয়। গরু-ছাগল, স্বর্ণালংকারও লুটে নেয়। ভয়ে আমার স্বামী পালিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।”
এ ঘটনায় রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, শতাধিক মানুষ ওই নারীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ তার মাথার কাপড় খুলে দিচ্ছে, কেউ মুঠোফোনে দৃশ্য ধারণ করছে, কেউ হাসছে।
ঘটনার পর সাংবাদিকরা ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজায় তালা, ভেতরে আসবাবপত্র ভাঙচুর করা, উঠানে পড়ে আছে দড়ি ও কাটা চুল।
অভিযুক্ত রিপন আলী বলেন, “নারীটি আমাদের ঘর থেকে মাংস ও টাকা চুরি করেছে। তাই লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে এসব করেছে।” তার স্ত্রী দাবি করেন, “আমি শুধু দড়ি দিয়ে বেঁধে এক চড় মেরেছি, কিন্তু কে চুল কেটেছে জানি না।”
অন্যদিকে মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত কাশেম নামের এক ব্যক্তি বলেন, “নারীটি এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে চুরি করেছে। সালিশে সিদ্ধান্ত হয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে তার গরু ও ছাগল নেওয়া হবে।”
তবে ইউপি সদস্য শাহ আলম বলেন, “আমি শুধু তাকে স্বজনদের হাতে তুলে দিয়েছি। গরু-ছাগল নেওয়ার ব্যাপারে কিছু জানি না। আইন নিজের হাতে নেওয়া ঠিক হয়নি।”
ঘটনার বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ বলেন, “পুলিশ খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, কিন্তু ভুক্তভোগীকে পাওয়া যায়নি। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
[ad_2]
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ আব্দুল লতিফ
প্রধান সম্পাদকঃ এম এস এন মাসুক হিমেল
সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ হাউজ ২৪, রোড ৩, মনিপুরি পাড়া, ফার্মগেট ঢাকা।
আঞ্চলিক কার্যালয়ঃ ৭ মতি কমপ্লেক্স রোড চকবাজার চট্টগ্রাম
মোবাইলঃ ০১৯৯৪৪২২৭৮৯
ই-মেইলঃ news@dainikprovhatersangbad.com