ভারতের ইতিহাসে হৃদয়বিদারক পাঁচ বিমান দুর্ঘটনা

Reporter Name / ৫৯ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫


ভারতের ইতিহাসের পাতা জুড়ে রয়েছে এমন কিছু বিমান দুর্ঘটনা, যা কেবল পরিসংখ্যান নয়, বরং অগণিত পরিবারের স্বপ্নভঙ্গের প্রতিচ্ছবি। নিচে তুলে ধরা হলো দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ ও হৃদয়বিদারক পাঁচটি যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনা

আহমেদাবাদে লন্ডনগামী বিমান দুর্ঘটনা: এক বিভীষিকাময় দুপুর

২০২৫ সালের ১২ জুন ভারতের আহমেদাবাদে ঘটে গেল এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, যা দেশের বিমান চলাচলের ইতিহাসে নতুন করে এক কালো অধ্যায় যুক্ত করলো। এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১, একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, গন্তব্য ছিল লন্ডন। উড্ডয়নের ঠিক কয়েক সেকেন্ড পরই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায় শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি মেডিকেল হোস্টেলের ওপর।

বিমানটিতে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন—এর মধ্যে ২২৭ জন যাত্রী এবং ১৫ জন ক্রু। মাত্র কয়েক মুহূর্তেই ২০৪ জন প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে অধিকাংশই যাত্রী। দুর্ঘটনার পর বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং সেটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আশপাশের ভবন ও গাড়িগুলিও ভস্মীভূত হয়।

যে হোস্টেলের ওপর বিমানটি পড়ে, সেখানে বেশিরভাগই ডাক্তারি ছাত্র ও ইন্টার্নরা থাকতেন। দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন হোস্টেলবাসীও আহত হন, যাদের মধ্যে অনেকেই চরমভাবে দগ্ধ হন। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়, স্থানীয় মানুষজন চিৎকার করে ছুটোছুটি করতে থাকেন।

বিধ্বস্তের আগে যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন পাইলট
বিধ্বস্তের আগে যে বার্তা পাঠিয়েছিলেন পাইলট

উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গে। দমকল বাহিনী, পুলিশ এবং এনডিআরএফ সদস্যরা যৌথভাবে উদ্ধার কাজ চালায়। আহতদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়, যদিও অনেকের অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। ঘটনার পর পরই বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করেন।

তদন্তকারীরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, উড্ডয়নের সময় ইঞ্জিনে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয় এবং সেটি হঠাৎ আগুন ধরিয়ে ফেলে। পাইলট ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিংয়ের চেষ্টা করলেও সময় ছিল না।
এই দুর্ঘটনা কেবল একটি বিমান নয়, অসংখ্য স্বপ্ন, পরিবার ও ভবিষ্যতকে মুহূর্তেই ধ্বংস করে দেয়। বিমান চলাচলের নিরাপত্তা এবং কারিগরি ত্রুটির বিষয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

কোঝিকোড বিমান দুর্ঘটনা (৭ আগস্ট ২০২০): বৃষ্টিভেজা রানওয়ের ভয়াবহ ট্র্যাজেডি

২০২০ সালের ৭ আগস্ট ভারতের কেরালা রাজ্যের কোঝিকোড বিমানবন্দরে ঘটে যায় একটি মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা, যা দেশজুড়ে শোকের ছায়া ফেলে। দুবাই থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট নম্বর আইএক্স ১৩৪৪ (বোয়িং ৭৩৭-৮০০) বিমানটি ‘ভান্দে ভারত’ মিশনের অধীনে প্রবাসীদের নিয়ে ফিরছিল। বিমানে ছিলেন মোট ১৯০ জন, যার মধ্যে ৬ জন ক্রু সদস্য এবং ১০ শিশু ছিল।

ঘটনার দিন বিকেলে কোঝিকোডে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। কোঝিকোড বিমানবন্দরটি একটি ‘টেবিলটপ’ রানওয়েতে অবস্থিত, অর্থাৎ রানওয়ের দু’পাশেই রয়েছে গভীর খাদ। বিকেল ৭টা ৪০ মিনিট নাগাদ বিমানটি অবতরণ করার চেষ্টা করে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়বার অবতরণ করার সময় বিমানটি রানওয়ের মাঝ বরাবর না নেমে অনেকটা এগিয়ে গিয়ে নামে, যার ফলে প্রয়োজনীয় ব্রেকিং স্পেস সংকীর্ণ হয়ে পড়ে।

কোঝিকোড বিমান দুর্ঘটনা
কোঝিকোড বিমান দুর্ঘটনা

বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রানওয়ে ছাড়িয়ে ৩৫ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায় এবং দু’ভাগে ভেঙে যায়। ককপিট সম্পূর্ণভাবে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এতে পাইলট ক্যাপ্টেন দীপক বসন্ত সতপুথে এবং কো-পাইলট আখিলেশ কুমারসহ ২১ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় ১২৩ জন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর ছিল।

উদ্ধার কাজ চালানো হয় রাতভর। স্থানীয় বাসিন্দারা, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের বের করে আনেন। ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (ডিজিসিএ) পরে জানায়, রানওয়ে জলের কারণে স্কিড হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে এবং অবতরণে সময় পাইলটদের সিদ্ধান্তগ্রহণে কিছু ভুল ছিল।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠে আসে টেবিলটপ রানওয়ের নিরাপত্তা নিয়ে এবং প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার মধ্যে বিমান পরিচালনার মানদণ্ড নিয়ে। এটি ছিল ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা, যা প্রবাসী ও স্বজনদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিল।

ম্যাঙ্গালোর বিমান দুর্ঘটনা: ভারতের বিমান ইতিহাসে এক ভয়াল সকাল

২০১০ সালের ২২ মে, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ম্যাঙ্গালোরে ঘটে যায় এক হৃদয়বিদারক বিমান দুর্ঘটনা, যা দেশের ইতিহাসে অন্যতম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ফ্লাইট ৮১২, বোয়িং ৭৩৭–৮০০ মডেলের বিমানটি দুবাই থেকে ম্যাঙ্গালোর আসছিল। ভোর ৬টা ৫ মিনিটে বিমানটি অবতরণের সময় রানওয়ে ছাড়িয়ে খাদে পড়ে গিয়ে আগুন ধরে যায়।

বিমানে মোট ১৬৬ জন আরোহী ছিলেন—১৬০ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু। রানওয়েটি ছিল ‘টেবিলটপ’ ধরনের, যার একপাশে গভীর খাঁদ। বিমানটি অবতরণের সময় নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে অনেক দূরে নেমে আসে, ফলে ব্রেকিং স্পেস কমে যায়। পাইলট শেষ মুহূর্তে থামাতে ব্যর্থ হন এবং বিমানটি ছিটকে পড়ে ২০০ ফুট নিচে। এতে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় এবং বিমানটির সামনের অংশ মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যায়।

ম্যাঙ্গালোর বিমান দুর্ঘটনা
ম্যাঙ্গালোর বিমান দুর্ঘটনা

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ১৫৮ জনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে ১০ জন শিশু ছিল। মাত্র ৮ জন আরোহী অলৌকিকভাবে বেঁচে যান, যাদের অনেকেই গুরুতর আহত হন। উদ্ধার কাজ ছিল অত্যন্ত কঠিন, কারণ দুর্ঘটনাস্থল ছিল দুর্গম এবং বিমানে আগুন জ্বলছিল প্রায় ঘণ্টাখানেক।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, পাইলট ক্যাপ্টেন জাটিন্ডার শার্মা অবতরণের সময় ক্লান্ত ছিলেন এবং রানওয়ের মাঝ বরাবর অবতরণ না করে অনেকটা এগিয়ে গিয়ে নামেন। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণে বোঝা যায়, পাইলটের প্রতিক্রিয়া ছিল বিলম্বিত।

এই দুর্ঘটনা শুধু এয়ার ইন্ডিয়ারই নয়, গোটা দেশের বিমান শিল্পের জন্য এক সতর্ক সংকেত। এর পর নিরাপত্তা প্রটোকল জোরদার করা হয়, বিশেষ করে টেবিলটপ রানওয়েগুলোর ক্ষেত্রে। কিন্তু নিহত যাত্রীদের পরিবারের বেদনা ও ক্ষতির পূরণ আর কোনো দিন সম্ভব নয়।

পাটনা বিমান দুর্ঘটনা, ২০০০: এক শহরের নিঃশব্দ আর্তনাদ

২০০০ সালের ১৭ জুলাই ভারতের বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনা শহরে ঘটে যায় এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা, যা শুধু বিমানের আরোহীদেরই নয়, মাটির ওপর বসবাসকারী সাধারণ মানুষের জীবনও তছনছ করে দেয়। এই দিনটি ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আছে।

ঘটনাটি ঘটে অ্যালায়েন্স এয়ারের ফ্লাইট ৭৪১২-এর সঙ্গে, যা কলকাতা থেকে দিল্লি যাচ্ছিল এবং পাটনা ছিল একটি নির্ধারিত যাত্রাবিরতি। বোয়িং ৭৩৭–২০০ মডেলের বিমানটিতে ৫৪ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু ছিলেন। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে যখন বিমানটি পাটনা বিমানবন্দরে অবতরণ করতে যাচ্ছিল, তখন হঠাৎ করে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

বিমানটি শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গার্ডেন রোড এলাকার একাধিক বাড়ির ওপর আছড়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়, বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা। এতে শুধু বিমানের আরোহীরাই নন, নিচে বসবাসকারী সাধারণ মানুষও প্রাণ হারান। মোট ৬৫ জন নিহত হন—যাদের মধ্যে ৫৫ জন বিমানে ও ১০ জন নিচে ছিলেন।

দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তদন্তে উঠে আসে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, অবতরণের সময় বিমানটির ডান ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয় এবং সেটি থেমে যায়। পাইলট এই যান্ত্রিক সমস্যার কথা বুঝতে পারেননি বা গুরুত্ব দেননি বলে অনুমান করা হয়। পাশাপাশি পাইলটের সিদ্ধান্তে ধীরতা ও ভুলের কারণেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

পাটনা বিমান দুর্ঘটনা
পাটনা বিমান দুর্ঘটনা

ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর) বিশ্লেষণে জানা যায়, বিমানের ফ্ল্যাপ ও গিয়ার ব্যবস্থায় সমস্যা ছিল এবং অবতরণ প্রক্রিয়ায় পাইলটের ত্রুটি ছিল স্পষ্ট। এই দুর্ঘটনা তদন্তের পর ডিজিসিএ পাইলট প্রশিক্ষণ ও বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আনে।

অন্যদিকে, গার্ডেন রোডের যেসব পরিবার ঘরবাড়ি ও আপনজন হারিয়েছেন, তাদের জীবনে এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে রইলো এক মর্মান্তিক ক্ষতির স্মারক হিসেবে। দুর্ঘটনার পর সারা দেশ জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা শোকবার্তা পাঠান।

চারখি দাদরি বিমান দুর্ঘটনা, ১৯৯৬: বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াল মাঝ-আকাশ ট্র্যাজেডি

১২ নভেম্বর ১৯৯৬, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ছোট্ট শহর চারখি দাদরি এক ভয়ঙ্কর ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ওঠে। এই দিনে ভারতের আকাশসীমায় দুটি যাত্রীবাহী বিমান—কাশাখস্তান এয়ারলাইন্সের আইএল ৭৬ এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৪৭—মাঝ আকাশে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই মর্মান্তিক সংঘর্ষে মোট ৩৪৯ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য প্রাণ হারান, যা আজও বিশ্বের অন্যতম মারাত্মক মাঝ-আকাশ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়।

সৌদি আরবের ফ্লাইট ৭৬৩ দিল্লি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করছিল, রিয়াদের উদ্দেশ্যে। তাতে ছিলেন ৩১২ জন যাত্রী ও ১৪ জন ক্রু। অন্যদিকে, কাজাখস্তান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ১৯০৭ ছিল কার্গো ও যাত্রী মিশ্র বিমান, যা দিল্লিতে অবতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এতে ছিলেন ২৭ জন যাত্রী ও ১০ জন ক্রু।
অবতরণ ও উড্ডয়ন দুটোই একই সময়ের মধ্যে হওয়ায় বিমান দুটি একে অপরের ভিন্ন উচ্চতায় থাকার কথা ছিল—কিন্তু ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল নির্দেশনার কারণে দুই বিমানের পথ এক হয়ে যায়।

কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের পাইলটরা সঠিক উচ্চতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হন। তারা নির্ধারিত ১৫,০০০ ফুটের বদলে নিচে নেমে আসেন ১৪,৫০০ ফুটে, যেটি ছিল সৌদি আরবের বিমানের উচ্চতা। পাইলটদের ইংরেজি ভাষাজ্ঞান সীমিত ছিল এবং যোগাযোগে দোভাষীর সহায়তা নেওয়া হচ্ছিল, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা সময়মতো বুঝতে পারেননি।

চারখি দাদরি বিমান দুর্ঘটনা
চারখি দাদরি বিমান দুর্ঘটনা

দুই বিমান প্রায় ৩০০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে পরস্পরের দিকে আসছিল। সংঘর্ষের ফলে কাজাখস্তান বিমানের পাখা সৌদি বিমানের ডানার ওপর সরাসরি আঘাত হানে। এতে দুটি বিমানই একসঙ্গে মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ে। ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে চারখি দাদরির বিস্তীর্ণ গ্রামীণ এলাকায়। দুর্ঘটনাস্থলটি এতটাই ভয়ানক ছিল যে, বহু মরদেহ চিহ্নিত করাই সম্ভব হয়নি।

এই দুর্ঘটনার পর ভারতের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (এটিসি) প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ট্র্যাফিক কোলিশন অ্যাভয়েডেন্স সিস্টেম (টিসিএএস) বাধ্যতামূলক করে। এটি ছিল ভারতীয় আকাশসীমার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। বিশ্বের অন্যান্য দেশও মাঝ-আকাশ নিরাপত্তা নিয়ে আরও কঠোর হয়ে ওঠে।

চারখি দাদরির আকাশে যে বিভীষিকা ঘটেছিল, তা শুধু প্রযুক্তিগত নয়—ভাষা সমস্যা, মানবিক ত্রুটি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যর্থতাও ছিল এর পেছনে দায়ী। এ দুর্ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আকাশে হাজারো যাত্রীর জীবনের নিরাপত্তা নির্ভর করে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা, পরিষ্কার যোগাযোগ এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/