টিউলিপের সঙ্গে দেখা করতে ড. ইউনূসের অস্বীকৃতি

Reporter Name / ২৮ Time View
Update : শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরের সময় লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করতে ড. ইউনূসকে সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন টিউলিপ।

টিউলিপের বিরুদ্ধে তাঁর খালা, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে অবৈধভাবে জমি গ্রহণের অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। লন্ডনে সাবেক ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তিনি ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগ করেছেন।

একটি চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ করেন টিউলিপ। তিনি উল্লেখ করেন, এই সাক্ষাৎ ‘ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সহায়ক হতে পারে।’

বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূসকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি চলতি সফরে টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন কিনা।

ড. ইউনূস বলেন, ‘না, করব না। কারণ এটা আইনি প্রক্রিয়া। আমি আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে চাই না। প্রক্রিয়াটি চলতে থাকুক।’

টিউলিপ যুক্তি দিয়েছেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তাদের অভিযোগের সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেয়নি এবং তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আদালতের বিষয়। আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে মামলা চালিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট উপাদান আছে কিনা, অথবা তা বাতিল করা হবে।’ বাংলাদেশের প্রসিকিউটরদের আরও স্বচ্ছ হওয়া উচিত এবং টিউলিপকে অপরাধের প্রমাণ দেওয়া উচিত কিনা—এই প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দুদকের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে এবং তারা সঠিক কাজটিই করছে।’

যদি টিউলিপ বাংলাদেশে কোনো অপরাধে দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তাঁর প্রত্যর্পণ চাওয়া হবে কিনা—এই প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যদি এটি আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হয়, তবে অবশ্যই।’

এদিকে এক বিবৃতিতে টিউলিপ জানান, ড. ইউনূস দেখা করতে অস্বীকৃতি জানানোয় তিনি হতাশ। তিনি বলেন, ‘কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি (অধ্যাপক ইউনূস) এ প্রতিহিংসার কেন্দ্রে রয়েছেন।’

টিউলিপ আরও বলেন, ‘আমি আশা করি তিনি এখন সংবাদমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার অভ্যাস বন্ধ করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেবেন। আদালতকে এটা প্রমাণ করার সুযোগ দেবেন যে, তাদের তদন্তের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অর্থের একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্যে রয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, আমার হতাশ হওয়া উচিত, নাকি তাঁর (স্টারমার) হতাশ হওয়া উচিত। এটা এক ধরনের মিসড অপারচুনিটি (হাতছাড়া হয়ে যাওয়া সুযোগ)।’ স্টারমারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এলে সুযোগ হতো বিশ্রাম করে পরিস্থিতি দেখার ও অনুভব করার।’

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সাক্ষাৎসূচি স্থির না করার কারণ ব্যাখ্যা করেছে কিনা—এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা এ ধরনের কোনো ব্যাখ্যা পাইনি। সম্ভবত তারা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত।’

বিবিসি জানতে পেরেছে, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্র (আইএসিসিসি) শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার সুযোগ খুঁজছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/