মদিনা আল-মুনাওয়ারায় অবস্থিত পবিত্র মসজিদে নববী—বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের হৃদয়ের কেন্দ্র। এখানে যে শুধু নামাজ আদায় হয় না, বরং অনুভূত হয় আত্মার প্রশান্তি, ইতিহাসের ছোঁয়া এবং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সান্নিধ্য।
এই মসজিদের পরিবেশ যেন সবসময় পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উন্নত থাকে, সেজন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। তেমনই একটি উদ্যোগ—নতুন বিলাসবহুল ও প্রযুক্তিসম্পন্ন কার্পেট স্থাপন।
সম্প্রতি মসজিদে নববীর পুরোনো কার্পেটগুলো সরিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে নতুন, উন্নত ও অত্যন্ত উচ্চমানের সৌদি কার্পেট দিয়ে। এই কার্পেটগুলো শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, বরং প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হয়েছে আরও স্মার্ট। প্রতিটি কার্পেটের ভেতরে যুক্ত করা হয়েছে একটি করে ইলেকট্রনিক মাইক্রোচিপ।
এই মাইক্রোচিপ আরএফআইডি প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্ত করা হয় একটি ইলেকট্রনিক সিস্টেমের সঙ্গে। এতে সংরক্ষিত থাকে প্রতিটি কার্পেটের উৎপাদনের তারিখ, অবস্থান, কতবার ধোয়া হয়েছে, পরবর্তী পরিষ্কারের সময়সূচি এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য।
ফলে এখন কার্পেটের ব্যবহার যেমন আরও সহজভাবে ট্র্যাক করা সম্ভব হচ্ছে, তেমনি মসজিদ কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করতে পারছে সর্বোচ্চ মানের পরিষেবা। প্রতিটি কার্পেটের গতিবিধি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার রুটিন, এমনকি কার্পেট কখন কোথায় রয়েছে—সবকিছুই এখন রয়েছে এক নির্ভরযোগ্য নজরদারির আওতায়।
প্রতিদিন কার্পেটগুলো জীবাণুমুক্ত করা হয়, পরিষ্কার করা হয় এবং ব্যবহৃত হয় উন্নতমানের আতর, যেন প্রতিটি মুসল্লি নামাজে দাঁড়ানোর সময় পান এক প্রশান্তিময় অভিজ্ঞতা।
বিশেষ যত্ন নেওয়া হয় মসজিদের সেই পুরোনো ‘হারাম’ অংশের কার্পেটগুলোর, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মুসল্লি একত্রিত হন। এই পবিত্র স্থানটির প্রতিটি ইঞ্চি যেন হয় পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ এবং ঈমানের প্রশান্তিতে ভরপুর—সেজন্য একটি বিশেষ বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
২০২৪ সালের শুরুতেই মসজিদে নববীতে বিছানো হয় ২৫ হাজার নতুন কার্পেট। যা শুধু সংখ্যায় নয়, মানেও অনন্য। এগুলো পুরু, টেকসই এবং ঘনঘন ধোয়া হলেও নষ্ট হয় না। সৌদি কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ইবাদতকে আরও সহজ ও প্রশান্তিময় করে তোলা।
মুসল্লিরা বলছেন, আতরের ঘ্রাণ, পরিষ্কার পরিবেশ, আর এই প্রযুক্তির ছোঁয়া—সব মিলে এখানে ইবাদত এক অন্যরকম শান্তি দেয়।
এসপিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মসজিদের চত্বর এবং ছাদেও এই উন্নত কার্পেটগুলো বিছানো হয়েছে। প্রতিদিনই সেগুলো স্যানিটাইজ করা হয় এবং আতর দিয়ে সুগন্ধিত রাখা হয়।
মসজিদে নববীর মর্যাদা ইসলামে অত্যন্ত উচ্চ। হাদীস অনুযায়ী, এখানে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়া সমান এক হাজার ওয়াক্ত নামাজের সওয়াবের। আর তাই, এমন একটি জায়গায় প্রতিটি ছোট উদ্যোগও হয়ে ওঠে মহৎ ও ইবাদতের অনুষঙ্গ।
প্রযুক্তির আশীর্বাদ যখন পবিত্রতার সঙ্গে মিলে যায়, তখন তা শুধু উন্নয়ন নয়, হয়ে ওঠে ইবাদতের অংশ। মসজিদে নববীর নতুন কার্পেট তারই এক নিদর্শন—যেখানে প্রতিটি সিজদা যেন প্রযুক্তি আর ভালোবাসার এক অভাবনীয় সম্মিলন
https://slotbet.online/