মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলার আশঙ্কা

Reporter Name / ৫৪ Time View
Update : শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫


ইরানে ইসরায়েলের হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে ইরানি হামলার আশঙ্কার তৈরি হওয়ার পর এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ কথা জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলা না চালানোর জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরানের মার্কিন ঘাঁটি ও সেনাসদস্যদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো উচিত নয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবৃতিতে রুবিও বলেন, ‘ইরানে ইসরায়েলের হামলার সঙ্গে আমরা জড়িত নই। ইসরায়েল আমাদের জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ তাদের আত্মরক্ষার জন্য জরুরি ছিল। আমাদের কাছে ওই অঞ্চলে থাকা মার্কিন সেনাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আর তা নিশ্চিতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা আমাদের আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবে, একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই—ইরানের মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো উচিত হবে না।’

রুবিওর বক্তব্যের পরপরই ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়েছে। এতে এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেও দায়ী করা হয়েছে। ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী ইরানের ইসরায়েলি হামলার জবাব দেওয়ার আইনি ও বৈধ অধিকার রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের প্রিয় স্বদেশ ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের বিপজ্জনক ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ভোগ করতে হবে জায়নবাদীদের। পাশাপাশি এর সম্পূর্ণ দায়ভার নিতে হবে তার মিত্রদেরও। ইরানের বিরুদ্ধে জায়নবাদী শাসনের এই আগ্রাসী কার্যকলাপ যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় ও অনুমোদন ছাড়া সম্ভব নয়। সুতরাং, এই শাসনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারও ইসরায়েলের এই দুঃসাহসিক অভিযানের বিপজ্জনক পরিণতির জন্য দায়ী থাকবে।’

এদিকে, বিশ্লেষকেরাও বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গত কয়েক দিনের কার্যকলাপই নিশ্চিত করে, ইরানে ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে পুরোপুরি অবগত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। আল-জাজিরার সাংবাদিক অ্যালেন ফিশার বলেন, ‘নিঃসন্দেহে, সব ইঙ্গিতই সেই দিকেই যায় যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আগে থেকেই হামলার ব্যাপারে জানানো হয়েছিল। হামলা শুরুর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল যে বাগদাদে তাদের দূতাবাস থেকে অপরিহার্য নয় এমন কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া শুরু হবে। একই সঙ্গে, অঞ্চলজুড়ে অন্যান্য দূতাবাসের কর্মীদেরও ইচ্ছে হলে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এসব পদক্ষেপ থেকেই মনে হচ্ছিল, কোনো না কোনো হামলা আসন্ন।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক ঘণ্টায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়ে জানান যে, তিনি তাঁর সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমাধানের পথে এগোতে। তবে, তাঁর মূল বক্তব্য ছিল—তিনি চান না ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করুক, তবে তিনি আশা করেছিলেন আলোচনার সুযোগ থাকবে। ইসরায়েল যে হামলার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে গেছে, সেটি বোঝায়, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত না থাকলেও—যেমনটি এখন শোনা যাচ্ছে—তারা আগেই এ বিষয়ে অবহিত ছিল। বর্তমানে হোয়াইট হাউসের কংগ্রেসনাল পিকনিকে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চয়ই জানতেন ইসরায়েল কী করতে চলেছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার মুখে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সাড়া দেবে?’

এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানিয়েছেন তিনি এ হামলার ব্যাপারে জানতেন। তবে, মার্কিন সেনারা এই হামলায় কোনো ভূমিকা রাখেনি।

কয়েক দিন ধরেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে ইসরায়েল হামলা চালাতে পারে। আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোরে সেই আশঙ্কা সত্যি করে ইরানের কমপক্ষে ৬টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী—আইডিএফ। এ হামলায় ইসলামি বিপ্লবী গার্ড প্রধান হোসেইন সালামি এবং ২৫ বছর ধরে দেশটির পারমাণবিক শক্তিবিষয়ক সংস্থার প্রধানের দায়িত্বে থাকা ফারেদুন আব্বাসি নিহত হয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বহু বেসামরিকেরও প্রাণ গেছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/