যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটিক স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ মেলিসা হর্টম্যান ও তার স্বামী মার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে তাদের নিজ বাসভবনে ঢুকে এক ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে এই হামলা চালায়। পরে মিনেসোটা স্টেট পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
এই নৃশংস ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মিনেসোটা গভর্নর ও ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজ। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।”
হর্টম্যান সম্প্রতি মিনেসোটা হাউসে একটি বিতর্কিত প্রস্তাব এইচএফ১-এর পক্ষে একমাত্র ডেমোক্র্যাট সদস্য হিসেবে ভোট দেন, যা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা শুধুমাত্র মার্কিন নাগরিকদের জন্য সীমিত করে। এই ভোটের সময় তিনি আবেগে কেঁদে ফেলেন। বিলটি ৬৮–৬৫ ভোটে পাস হয়, যেখানে হর্টম্যানের ভোটটি ছিল নির্ধারক।
বিলটি নিয়ে রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই প্রেক্ষাপটে শনিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ৭৯তম জন্মদিনে ‘No Kings’ নামে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর গাড়ি থেকেও ‘No Kings’ লেখা প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
একই রাতে আরেক ডেমোক্র্যাট সিনেটর জন হফম্যান ও তার স্ত্রী ইভেটকেও গুলি করা হয়। তারা দুজনেই গুরুতর আহত হয়ে অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। হফম্যান বিতর্কিত বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
রাত আনুমানিক ৩টা ৪৫ মিনিটে পুলিশকে ফোন করে জানানো হয়, একটি পুলিশ এসইউভির মতো গাড়ি একটি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং একজন ব্যক্তি পুলিশ ইউনিফর্মে দরজায় উপস্থিত। পরে জানা যায়, তিনি আসলে ছদ্মবেশী ছিলেন এবং পুলিশের ছদ্মবেশে ঢুকেই গুলি চালান। পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি হলে গুলি বিনিময় হয় এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।
মেলিসা হর্টম্যান ছিলেন মিনেসোটা হাউসের ডিএফএল ককাসের নেতা ও সাবেক স্পিকার (২০১৯–২০২৫)। তিনি হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুল থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে মাস্টার্স এবং মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ডিগ্রি অর্জন করেন।
জন হফম্যান মিনেসোটার ৩৪তম জেলা থেকে সিনেটর হিসেবে ২০১২ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি হিউম্যান সার্ভিসেস কমিটির চেয়ারম্যান।
গভর্নর ওয়ালজ বলেন, “স্পিকার হর্টম্যান ছিলেন সেবাপরায়ণ ও হাস্যোজ্জ্বল এক নেত্রী, যিনি মিনেসোটার জন্য অসাধারণ অবদান রেখেছেন।”
পাবলিক সেফটি কমিশনার বব জ্যাকবসন বলেন, “এই হামলা শুধু দুটি পরিবার নয়, বরং পুরো রাজ্য ও গণতন্ত্রের জন্য এক অন্ধকার দিন।”
ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং জনগণকে বিক্ষোভ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
https://slotbet.online/