জামালাপুরের আলোচিত ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

Reporter Name / ৩৩ Time View
Update : রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫


জামালপুরের একটি অন্ধকার অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হলো জামালপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাহসী ও পেশাদার অভিযানের মাধ্যমে। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতনের আলোচিত ঘটনায় অবশেষে প্রধান আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভিকটিম বুলি বেগম (৩৫) জামালপুর জেলার পাঁচগাছি এলাকার বাসিন্দা এবং তিন সন্তানের জননী। তার স্বামী মোঃ মুগল মিয়া কর্মসূত্রে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে আসামী জাহাঙ্গীর আলম বারবার তাকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে হয়রানি করত।

২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাত ১০টায় নিজ বাড়িতে থাকাকালীন জাহাঙ্গীর কৌশলে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে। ভিকটিম ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ তাকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করা হয়, যার ফলে রক্তক্ষরণের কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ভিকটিমের পিতা মোঃ আবু বকর দুদু চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল জামালপুর থানায় মামলা নং-৫১ মূলে এজাহার দায়ের করেন। এরপর জামালপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দক্ষ দল, ওসি ডিবি-১ মোঃ নাজমুস সাকিবের নেতৃত্বে এবং এসআই মোঃ আব্দুল্লাহ আল আজাদ ও এসআই আব্দুল মতিনের সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে শনিবার (১৪ জুন) রাত ১০ টা ২০ মিনিটে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানাধীন বালুবাড়ী গ্রাম থেকে প্রধান আসামী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

ওসি ডিবি-১ মোঃ নাজমুস সাকিব বলেন, “এই ঘটনায় শুধু একজন নারীই নয়, একটি পরিবার ও একটি সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা মামলার শুরু থেকেই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করেছি। আসামী যেভাবে গা ঢাকা দিয়েছিল, তাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে আমরা দিন-রাত এক করেছি। পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিট হিসেবে আমরা অপরাধ দমনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, পিপিএম-সেবা বলেন, “এই ঘটনা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। ডিবি পুলিশের চৌকস এবং পেশাদার দল এই ঘটনার আসামিকে গ্রেপতারে যে ধৈর্য ও কৌশল দেখিয়েছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। জামালপুর জেলা পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। অপরাধী যত শক্তিশালীই হোক, আইনের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভিকটিম পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

ভিকটিম পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে জামালপুর জেলা পুলিশ মৃত বুলি বেগমের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছে। তার প্রতি এই নৃশংসতা সমাজে যে জেগে ওঠা তৈরি করেছে, তা যেন আর কোনও প্রাণের জন্যও না ঘটে, এই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জামালপুর জেলা পুলিশের অঙ্গীকার হলো নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ন্যায় ও মানবতার পক্ষে জনগণের পাশে থাকা।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/