ইরানি নেতাদের হত্যার মিশনে ইসরায়েলের ‘এআই সেনা’

Reporter Name / ২৯ Time View
Update : বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫


ইরানে ইসরায়েলের পরিচালিত ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর সফলতায় বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) গভীর রাতে শুরু হওয়া এই হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় সামরিক নেতা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন। গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক এবং উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সহায়তায় অত্যন্ত নির্ভুলভাবে হামলা চালায় ইসরায়েল। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

এই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছে জর্ডানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়া নিউজ। এতে বলা হয়, হামলার প্রস্তুতি, হামলার বাস্তবায়ন এবং লক্ষ্য নেতাদের মৃত্যু নিশ্চিত করা পর্যন্ত—সব সামরিক পদক্ষেপে ইসরায়েল এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার (১৩ জুন) ভোর পর্যন্ত চালানো ওই অতর্কিত হামলায় ইরানের অভ্যন্তরে থাকা সামরিক স্থাপনা এবং পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও যুদ্ধবিমান হামলা চালানো হয়। এতে একাধিক জেনারেল এবং পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। হামলার সময় ইরানের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সাময়িকভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

বর্তমান ও সাবেক গোয়েন্দা এবং সামরিক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি এপি-র প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাইজিং লায়ন’ অপারেশনের পরিকল্পনা কয়েক বছর ধরে চলেছে। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ-এর এক সাবেক কর্মকর্তার মতে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে টার্গেট করে মোসাদের বহু বছরের প্রচেষ্টার চূড়ান্ত পরিণতি এই হামলা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোসাদ ও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ছিল ছোট আকারের ড্রোন, যেগুলো যানবাহনে করে গোপনে ইরানে পাঠানো হয়।

২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ইরানে চালানো এক বিমান হামলার সময় পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অপারেশনের সময় নির্ধারণ করা হয়। ওই সময় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা ধরা পড়ে।

হামলায় এআই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টার্গেট নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, তথ্য বিশ্লেষণ, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটানো এবং ইরানি নেতাদের গতিবিধি নজরদারিতে এআই ব্যবহৃত হয়েছে।

২০২৪ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই হামলার প্রস্তুতির নির্দেশ দেন। এরপর মোসাদ কর্মকর্তারা ইরানের শীর্ষ সামরিক ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করেন। তাদের কর্মস্থল, দৈনন্দিন রুটিন ও অবসরকালীন অভ্যাসও বিশ্লেষণ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

এআই সিস্টেমের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের গুপ্তচররা টার্গেটদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, মোসাদ দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ব্যাহত করতে সক্রিয়। ২০০০ সালের শুরু থেকে স্টাক্সনেট ভাইরাস ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ অভিযান, ২০১৮ সালে ইরানের গোপন পারমাণবিক নথি চুরি—সবকিছুই এই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ ছিল। এসব অভিজ্ঞতা এবার ‘রাইজিং লায়ন’ অভিযানে কাজে লাগানো হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/