ইউরোপের রঙিন স্বপ্নের আড়ালে লুকিয়ে থাকা প্রবাস জীবনের কঠিন বাস্তবতার আরও এক মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠলেন মোহাম্মদ আলী। সিরাজগঞ্জের সন্তান এই প্রবাসী জীবনের মানে খুঁজতে গিয়েছিলেন পর্তুগালে, পাঁচ বছর আগে। উন্নত জীবনের আশা নিয়ে পাড়ি জমালেও, ২৫ জুন লিসবনে চলন্ত মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সবকিছুর ইতি টানেন তিনি।
তার মৃত্যু শুধু একজন প্রবাসীর না, এটা যেন হাজারো পরবাসী শ্রমিকের না বলা কথার প্রতিচ্ছবি। প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের হৃদয়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কাজের সহকর্মীরা জানান, মোহাম্মদ আলী ছিলেন সদালাপী ও পরিশ্রমী। তার এই সিদ্ধান্তে তারা হতবাক।
ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক অশান্তি, স্ত্রীর অবহেলা, মানসিক চাপে ভেঙে পড়া, কাজের অনিশ্চয়তা এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকা—এই সবকিছু মিলিয়েই তাকে আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে।
পর্তুগাল প্রবাসী শহিন আহমদ বলেন, “এই মৃত্যু কোনো সাধারণ মৃত্যু নয়। এটা হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা কান্নার প্রতীক।”
প্রবাসজীবন শুধু টাকা উপার্জনের গল্প নয়, বরং এক নীরব যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই। প্রতিদিনের মানসিক বোঝা, সমাজ ও পরিবারের প্রত্যাশা, বৈধতার জন্য যুদ্ধ, আর চুপচাপ নিজের চোখের পানি লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা—এই নিয়েই গড়ে ওঠে একজন প্রবাসীর জীবন।
দিন দিন কঠোর হতে থাকা ইউরোপীয় অভিবাসননীতি, ডানপন্থীদের বৈরী মনোভাব, কম বেতন, কাজের সংকট—সবকিছু মিলে প্রবাসীদের অনেকেই হতাশায় ভুগছেন। মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর ঘটনায় এসব কারণ আবারও আলোচনায় এসেছে।
https://slotbet.online/