কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তি চেয়ে ৫১ জনের বিবৃতি

Reporter Name / ১ Time View
Update : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫


২০২৪ এর ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫১ জন বিশিষ্ট সাংবাদিক। বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোর সম্পাদক তৈমুর ফারুক তুষার প্রেরিত এই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশের শীর্ষ সাংবাদিক সংগঠনগুলোর বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লজ্জা ও শঙ্কা প্রকাশ করছি যে, দেশ এখন মব সন্ত্রাসের কাছে জিম্মি।’

গণমাধ্যমও এই জিম্মি দশার বাইরে নয়। সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলা, চাকরিচ্যুতি, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের মতো ঘটনাগুলোর কারণে সাংবাদিক সমাজ এক ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।

দেশের একাধিক শীর্ষ সংবাদপত্রের কার্যালয়ের সামনে মব সন্ত্রাসীরা গরু জবাই করে ‘জিয়ারত’ আয়োজন করেছে—যা নজিরবিহীন। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে চিহ্নিত এসব সন্ত্রাসী এসব ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। অথচ তাদের কাউকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। এ অবস্থায় মনে করা অমূলক নয় যে, ক্ষমতাসীন কোনো মহল এসব অপকর্মে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।

দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং অধিকারকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

গত ১১ মাসে সারাদেশে হত্যা মামলাসহ নানা হয়রানিমূলক মামলার আসামি হয়েছেন ৪৬১ জন সাংবাদিক, গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৯ জনকে।

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের লাশের পাশে সাংবাদিক দম্পত্তি
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের লাশের পাশে সাংবাদিক দম্পত্তি

তথ্য মন্ত্রণালয় ১৬৮ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সারাদেশে সাংবাদিক সংগঠনগুলো থেকে ১০১ জন সাংবাদিকের সদস্যপদ রদ/বাতিল/বহিষ্কার করা হয়েছে। বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তিন শতাধিক সাংবাদিককে। এমকি শতাধিক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। গত ১১ মাসে সহস্রাধিক সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো দখল করা হয়েছে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) কার্যালয় ১১ মাস ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

আমরা মনে করি, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মতো সাংবাদিকদেরও আইনি প্রতিকার ও জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কিছু অজানা কারণে কারাগারে বন্দি সাংবাদিকরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বিনা বিচারে মাসের পর মাস কারাবন্দি সাংবাদিকরা মানবাধিকারের সরাসরি লঙ্ঘনের শিকার। আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে এই মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আনবে, গণমাধ্যম কর্মীদের ‘ট্যাগ’ দিয়ে হয়রানি বন্ধ করবে, সাংবাদিকদের চাকরির সুরক্ষা দেবে।

কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় এক বছর পরও পরিস্থিতির কোনো দৃশ্যমান উন্নতি ঘটেনি। ফলে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

আমরা সকল সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচার দাবি করছি, সাংবাদিকদের হয়রানির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং কারাবন্দি সাংবাদিকদের জামিন ও মুক্তির দাবি করছি।

সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান:
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন, সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করুন, যারা গণমাধ্যমকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন।

বিবৃতিদাতাগণ (ক্রমানুসারে নয়):

(১) আবু জাফর সূর্য
(২) সৈয়দ শুকুর আলী শুভ
(৩) নজরুল কবীর
(৪) সৈয়দ বোরহান কবির
(৫) আকতার হোসেন
(৬) জাকির হোসেন ইমন
(৭) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন (তানভীর)
(৮) শেখ জামাল
(৯) মহসিন কাজী
(১০) মাহমুদুল আলম নয়ন
(১১) জামাল উদ্দিন
(১২) সাঈদুজ্জামান সম্রাট
(১৩) দীপক চৌধুরী বাপ্পি
(১৪) ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ
(১৫) রিয়াজ হায়দার চৌধুরী
(১৬) নিজামুল হক বিপুল
(১৭) মো. আশরাফ আলী
(১৮) মাইনুল হোসেন পিঙ্গু
(১৯) আব্দুস সালাম শান্ত
(২০) খায়রুল আলম
(২১) তৌফিক মারুফ
(২২) রিয়াজুল বাশার
(২৩) সোহেলী চৌধুরী
(২৪) গোলাম মুজতবা ধ্রুব
(২৫) ইসরাফিল শাহীন
(২৬) সাইদ আলী
(২৭) রাজু হামিদ
(২৮) জুবায়ের চৌধুরী
(২৯) এ কে এম ওবায়দুর রহমান
(৩০) রেজাউল করিম রেজা
(৩১) সাজেদা পারভীন
(৩২) মো. রমজান আলী
(৩৩) গাজী তুষার আহমেদ
(৩৪) ওয়ারেজুন্নবী খন্দকার
(৩৫) প্রদীপ চৌধুরী
(৩৬) ঝর্ণা মনি
(৩৭) ইমতিয়ার উদ্দিন
(৩৮) জে এম রউফ
(৩৯) হামিদ মোহাম্মদ জসিম
(৪০) সিদ্দিকুর রহমান
(৪১) মো. আলমগীর হোসেন
(৪২) শামীমা দোলা
(৪৩) এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেন সবুজ
(৪৪) ফারজানা বিস্তে হোসেন (ফারজানা শোভা)
(৪৫) রফিকুল ইসলাম সুজন
(৪৬) তৈমুর ফারুক তুষার
(৪৭) নাসরীন গীতি
(৪৮) শামীমা আক্তার
(৪৯) কিবরিয়া চৌধুরী
(৫০) শফিকুল ইসলাম
(৫১) এম জহিরুল ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/