ফেনীতে বৃষ্টি ও নদীর পানি কিছুটা কমলেও বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ ক্রমেই বাড়ছে। ফুলগাজী ও পরশুরামে পানি নামতে শুরু করলেও ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে একাধিক এলাকা। চার উপজেলায় শতাধিক গ্রাম এখনও পানির নিচে।
বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় দুর্গত এলাকাগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয়রা ত্রাণ সহায়তা দিয়ে পাশে দাঁড়ালেও প্রয়োজনের তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর তীব্র স্রোতে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ২১টি স্থান ভেঙে গেছে।
ফুলগাজীর দৌলতপুরের রেজিয়া বেগম বলেন, “প্রতিবছরই জুলাই-আগস্টে পানির নিচে ডুবে যাই। বাঁধ ভেঙে যায়, সব জিনিস ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। মনে হয় এখানে জন্মানোই ভুল ছিল।”
একই সুরে উত্তর শ্রীপুরের আলী আজ্জম বলেন, “ক্ষমতা বদলায়, কিন্তু আমাদের কষ্ট বদলায় না। বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল নেই—দুঃখের শেষ নেই।”
পুষ্পিতা রানি বলেন, “পানিতে ঘর ডুবে গেছে, শিশু-বৃদ্ধদের নিয়ে কষ্টে আছি। নিরাপদ পানি নেই, স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। বাঁধ মেরামতের কাজ শুধু কাগজে কলমেই হয়।”
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮.৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বৃষ্টির হার কমায় পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, মুহুরী নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। নতুন করে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা আপাতত নেই।
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, চার উপজেলায় ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় সাত হাজার মানুষ রয়েছেন। ২০ হাজারের বেশি দুর্গতকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের মতে, যতক্ষণ না টেকসই বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে, ততক্ষণ প্রতি বছরই একই দুর্ভোগে পড়তে হবে—এ যেন নিয়তির পরিহাস।
https://slotbet.online/