গোসলের পর ওজু: ইসলামী বিধানে বাস্তবতা

Reporter Name / ৩ Time View
Update : রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫


ইসলামে দৈহিক পবিত্রতা অর্জনের দুইটি মূল উপায় হলো ওজু ও গোসল। এ দুইটির মাধ্যমেই একজন মুসলমান ইবাদতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন। পবিত্রতা ছাড়া নামাজসহ কোনো ফরজ ইবাদত গ্রহণযোগ্য হয় না। তবে অনেকেই প্রশ্ন করেন, ফরজ বা সুন্নত পদ্ধতিতে গোসল করার পর নামাজের আগে নতুন করে ওজু করতে হবে কি না?

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাকো, তবে নিজেদের শরীর (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নাও।” — (সুরা মায়েদা: আয়াত ৬)

এই আয়াত ইঙ্গিত করে, গোসলই পবিত্রতার পূর্ণতা এনে দেয়, আলাদা করে ওজুর প্রয়োজন হয় না যদি গোসল সঠিক নিয়মে সম্পন্ন হয়।

বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) গোসলের পর ওজু করতেন না।
হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, “নবীজি (সা.) গোসলের পর নতুন করে ওজু করতেন না।” — (সুনানে নাসায়ি)

আরেক হাদিসে তিনি বলেন, “নবীজি (সা.) গোসলের আগে ওজু করে নিতেন, তবে গোসলের পর ওজু করতে আমি তাকে দেখিনি।” — (তিরমিজি, নাসায়ি)

গোসল ও ওজুর ফরজ

গোসলের ফরজ ৩টি:

ওজুর ফরজ ৪টি:

  • পুরো মুখ ধোয়া

  • দুই হাত কনুইসহ ধোয়া

  • মাথায় মাসেহ করা

  • দুই পা টাখনুসহ ধোয়া

গোসল করলে স্বাভাবিকভাবেই ওজুর এই ফরজগুলো পূরণ হয়ে যায়। মাথা মাসেহ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম মুফতি ইউসুফ লুধিয়ানভি (রহ.) বলেন,
“গোসলের সময় মাথায় পানি ঢালার মাধ্যমে মাসেহের ফরজও আদায় হয়ে যায়।”

নতুন করে ওজু করা কি জায়েজ?

গোসলের পর ওজু না করাই রাসুল (সা.)-এর অভ্যাস। তবে কেউ যদি নামাজের আগে নতুন করে ওজু করে নেয়, সেটা মুস্তাহাব হিসেবে গৃহীত হবে, এতে সওয়াব রয়েছে। তবে কোনো কোনো ফকিহের মতে, এটি পানির অপচয় এবং সুন্নাতের খেলাফ। — (সূত্র: ফতোয়ায়ে আলমগিরি, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা ১৪)

ফরজ বা সুন্নত অনুযায়ী সঠিকভাবে গোসল করা হলে নতুন করে ওজুর প্রয়োজন নেই। তবে কেউ চাইলে ইচ্ছাকৃতভাবে ওজু করে নিতে পারে, এটি অতিরিক্ত সওয়াবের কাজ হবে। তাই ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে গোসলের পর ওজু করাটা জরুরি নয়, বরং ঐচ্ছিক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/