মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ফলে ওয়ালমার্টের কয়েকটি পোশাকের অর্ডার স্থগিত বা বিলম্বিত করা হয়েছে।
পাল্টা শুল্ক নিয়ে ক্রয়াদেশ বাতিল বা বিলম্বের ঘটনায় শঙ্কায় পোশাক ও বস্ত্র খাতের মালিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেওয়াকে দেশের পোশাক খাতের জন্য একটি অশুভ বার্তা বলে মনে করছেন তাঁরা।
এরই মধ্যে ওয়ালমার্ট বাংলাদেশের একটি পোশাক কারখানার কিছু ক্রয়াদেশ পিছিয়ে দিয়েছে, কিছু স্থগিত করেছে।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক দেশের পোশাক খাতের জন্য একটি অশুভ বার্তা হলেও আমাদের বিশ্বাস, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে একটি ইতিবাচক ফলাফল আসবে। তবে ৩৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকলে সত্যিই টিকে থাকা কঠিন হবে।’
ক্রেতাদের কাছ থেকে কার্যাদেশ বাতিল বা বিলম্বিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়ালমার্ট তাদের একটি সরবরাহকারীকে কার্যাদেশ বিলম্বিত করার কথা বললেও বাতিল করার ঘটনা জানা যায়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বাংলাদেশের তিনজন কারখানা মালিক ও ওয়ালমার্টের এক সাপ্লায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে ওয়ালমার্টের জন্য প্রায় ১০ লাখ পিস প্যান্টের অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার অর্ডারটি স্থগিত করা হয়।
ক্লাসিক ফ্যাশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্চেন্ডাইজিং ম্যানেজার ফারুক সৈকত এক ই-মেইলে লেখেন,‘আমরা যেমন আলোচনা করেছি, তেমনি দয়া করে নিচের সব বসন্তকালীন মৌসুমের অর্ডার স্থগিত রাখুন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর প্রচণ্ড হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।’
ই-মেইলটি ইকবাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনকে পাঠানো হয়, যার অনুলিপি রয়টার্সের হাতে এসেছে। ক্লাসিক ফ্যাশন একটি সাপ্লায়ার ও বাইয়িং এজেন্ট, যারা খুচরা বিক্রেতাদের পক্ষে অর্ডার দেয়।
সৈকত ই-মেইলে আরও লেখেন, ‘আমাদের ম্যানেজমেন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত বাংলাদেশে উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত করা হচ্ছে। যদি শুল্কসংক্রান্ত বিষয়টি মীমাংসা হয়, তাহলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা উৎপাদন আবার শুরু করব।’
তিনি রয়টার্সকে বলেন, সিদ্ধান্তটি ওয়ালমার্ট নয়, ক্লাসিক ফ্যাশন নিজেই নিয়েছে। ওয়ালমার্টের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য যদি ৩৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকে, তাহলে টিকে থাকা খুব কঠিন হবে। তখন এখনকার মতো অর্ডার আর আসবে না।’
ঢাকাভিত্তিক আরেক পোশাক কারখানার মালিক জানান, তিনি ওয়ালমার্টের জন্য ২০২৬ সালের বসন্ত মৌসুমের ট্রাউজারের একটি অর্ডার নিয়ে এক আমদানিকারকের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তবে শুল্কসংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে ওই আমদানিকারক তাঁকে বলেন, অর্ডার নিশ্চিত করতে আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
https://slotbet.online/