২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি ২৪ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছে আপিল বিভাগ। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি বৃহস্পতিবার শুরু হয়।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষ করে আদালত পরবর্তী তারিখ ২৪ জুলাই নির্ধারণ করে।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। অন্যদিকে, আসামিদের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এস এম শাহজাহান জানান, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে তিনি পলাতক দুই আসামি—মাওলানা তাজউদ্দিন ও মো. হানিফের পক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপক্ষ মামলার নথিপত্র (পেপারবুক) থেকে সাক্ষ্য ও হাইকোর্টের রায়ের অংশ উপস্থাপন করেছে।
হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে সব আসামিকে খালাস দেওয়া হলে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। ওই রায় গত বছরের ১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয় এবং একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর এর পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল) চেয়ে আবেদন করে।
চলতি বছরের ১ জুন আপিলের অনুমতি মঞ্জুর করে আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এখন শুনানি চলছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং তিন শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। ঘটনার পর হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়।
২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া অভিযোগপত্রে ২২ জনকে আসামি করা হয়। পরে অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩ জুলাই আরেকটি সম্পূরক অভিযোগপত্রে নতুন আসামি যোগ করে মোট ৫২ জনকে আসামি করা হয়।
তিনজন আসামির মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ৪৯ জন।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দেওয়া বিচারিক রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ১১ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, ও বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ অনেকে।
কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও রাজনীতিকরা।
হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানির পর ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ, যার শুনানি বর্তমানে আপিল বিভাগে চলমান।
https://slotbet.online/