শেষ পর্যন্ত জয়টা এল বহু কাঙ্ক্ষিত এক রাতে। দীর্ঘ নয় বছরের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ। যদিও ১১১ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কাজটা যতটা সহজ হওয়ার কথা ছিল, ততটা সহজ করে নিতে পারেনি লাল-সবুজরা। তবে পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয়ের দৃঢ়তায় ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ একদমই ছন্দে ছিল না। একের পর এক ব্যর্থ হন টপ অর্ডারের ব্যাটাররা। ফখর জামান কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও (৩৪ বলে ৪৪), বাকিরা ছিলেন একেবারেই নিস্প্রভ। মাত্র ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
দুর্দান্ত বোলিং করেন মুস্তাফিজুর রহমান (৪-০-৬-২) এবং তাসকিন আহমেদ (৩.৩-০-২২-৩)। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব ও মাহেদী হাসানও।
তবে ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই ফিরেন তানজিদ হাসান তামিম। পরের ওভারেই বিদায় নেন অধিনায়ক লিটন দাস। হঠাৎ করেই ৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল।
এই চাপ সামাল দেন তাওহীদ হৃদয় ও পারভেজ হোসেন ইমন। শুরুতে দ্রুত কয়েকটি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের গতি ফেরান তারা। এরপর খেলেন ধীরস্থির ও পরিস্থিতি অনুযায়ী ইনিংস। হৃদয় দুইবার জীবন পেয়ে ৩৬ রান করে আউট হলেও, পারভেজ ইমন ছিলেন অনবদ্য। ৩৯ বলে ৫৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে দলকে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি।
মিরপুরে এদিন একটি রেকর্ডও গড়েছেন মোস্তাফিজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন সাশ্রয়ী ও কার্যকর স্পেল টি-টোয়েন্টিতে আগে দেখা যায়নি।
পাকিস্তানের পক্ষে একমাত্র উজ্জ্বল দিক ছিলেন অভিষিক্ত পেসার সালমান মির্জা, যিনি মাত্র ১৭ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন। তবে বাকিদের পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই হতাশাজনক। ফিল্ডিংয়েও ছিল মারাত্মক খামতি—হৃদয়ের দুটি ক্যাচই ধরতে ব্যর্থ হন ফিল্ডাররা।
১৪.৪ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান করে বাংলাদেশ, জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। তখনই কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। পরের ওভারে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
এই জয়ে ২০১৬ সালের পর প্রথমবার পাকিস্তানকে টি-টোয়েন্টিতে হারাল বাংলাদেশ। সেটিও আবার ঘরের মাঠে, মিরপুরে। এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তে দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টি থাকলেও ব্যাটিংয়ে কিছু জায়গায় কাজ করতে হবে, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছে এই ম্যাচ।
স্কোর সংক্ষেপ:
পাকিস্তান: ১১০ (১৯.৩ ওভারে)
ফখর জামান ৪৪, তাসকিন ৩/২২, মুস্তাফিজ ২/৬
বাংলাদেশ: ১১২/৩ (১৪.৪ ওভারে)
পারভেজ ইমন ৫৬*, হৃদয় ৩৬, সালমান মির্জা ২/১৭
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে
https://slotbet.online/