টেকনাফের লেদা রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। গত তিন রাত ধরে সংঘটিত দফায় দফায় গুলিবিনিময়ের ঘটনায় শুধু ক্যাম্প নয়, আশপাশের নূরালী পাড়া, পশ্চিম লেদা ও শিয়ালঘোনা গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে চরম উৎকণ্ঠা। রাত নামলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র, শিশু থেকে বৃদ্ধ; সবাই দুশ্চিন্তায় রাত কাটাচ্ছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গভীর রাতে প্রচণ্ড গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। গৃহবন্দি হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। কেউ কেউ নিরাপত্তার আশায় আত্মীয়ের বাড়িতে কিংবা পাশের গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছেন। মায়েরা সন্তানদের বুকে জড়িয়ে রাখেন, ভয়ে কেউ কেউ রাতভর জেগে থাকেন।
এলাকাবাসীর ধারণা, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যেই এসব সংঘর্ষ চলছে। ১৩ জুলাই মধ্যরাতে রঙিখালী উলুচামারি এলাকায় সংঘটিত গুলির দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভি ফুটেজেও।
এদিকে, গুলির পাশাপাশি অপহরণের ঘটনাও বেড়েছে। সম্প্রতি লেদা ক্যাম্প থেকে হেফজ বিভাগের এক শিশু রিয়াজ অপহৃত হয়। তার বড় বোন আনোয়ারা বেগম জানান, সন্ত্রাসীরা তাকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেছে। জানালে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এখনও রিয়াজের কোনো খোঁজ মেলেনি।
লেদা ক্যাম্পের বি-ব্লকের মাঝি নুর বশর জানান, “আগে কিছুটা শৃঙ্খলা ছিল। এখন নতুন আসা রোহিঙ্গারা পুরনো সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিশে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। রাত হলে বন্দি হয়ে পড়ি। পুলিশের সহযোগিতা চাইলেও তারা আসে না।”
স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্তমানে ক্যাম্পজুড়ে অন্তত সাতটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়। এদের মধ্যে রয়েছে আরসা, রঙিখালী আবুল আলম বাহিনী, সালমান শাহ গ্রুপ, শফি বাহিনী, পুতিয়া গ্রুপ, খালেক বাহিনী এবং চাকমা ডাকাত দল।
তবে ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কাউছার সিকদার গুলির ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের কোনো গোলাগুলির তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে অপহরণের বিষয়ে অবগত আছি।”
https://slotbet.online/