ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার প্রশ্নে উদাসীন ববি প্রশাসন

Reporter Name / ১১ Time View
Update : বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫


বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এক বছরেও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

শিক্ষার্থীরা জানান, যদি ২৯ জুলাইয়ের হামলাকারী ছাত্রলীগ সদস্যদের দ্রুত বিচার না হয়, তবে তারা আবারও আন্দোলনে নামবেন।

হামলার পর থেকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুনরায় সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাতিমতলা ও আশপাশের চায়ের দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের অবস্থান, শোডাউন ও গোপন বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে। এসব কার্যক্রমের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলিম সালেহির নাম উঠে এসেছে।

২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারির হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মী শাহরিয়ার সানকে দরজা ভেঙে ছাড়িয়ে নেয় সহকর্মীরা এবং পরে বিজয় মিছিল করে। এ হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় শাহরিয়ার সান ছিলেন ১৭ নম্বর আসামি।

২০২৪ সালের ২৯ জুলাই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে, আন্দোলনের সমন্বয়কসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী। এতে ১৫ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নেন শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে।

১ আগস্ট বিক্ষোভ সমাবেশ করতে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপরও হয়রানি ও হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, তারা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় আন্দোলন বানচাল করে দেয় এবং আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের গ্রেফতারে সহায়তা করে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করলেও তাতে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনের দাবি, শিক্ষার্থীরা সাক্ষ্য না দেওয়ায় মামলা এগোচ্ছে না। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন কেবল দায়সারা একটি মামলা করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে। তারা চাইছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজস্ব আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

মামলায় আসামিরা হলেন: আবুল খায়ের আরাফাত, আবিদ হাসান, মাহমুদুল হাসান তমাল, আল সামাদ শান্ত, খালেদ হাসান রুমি, সাইফ আহমেদ, সাব্বির হোসেন, শরীফুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান, টিকলী শরিফ, অশোক আলী, শাহরিয়ার সান, প্রসেনজিৎ।

আহত শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, “প্রক্টর ও পুলিশ বাহিনীর সামনে ছাত্রলীগের এই হামলা ছিল কাপুরুষতা। প্রশাসনের নিরব ভূমিকা ছাত্রলীগের মদদপ্রাপ্ত অবস্থাকে বোঝায়।”

সুজন মাহমুদ বলেন, “এখনো ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, “২৯ জুলাই ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি মামলা হয়েছে। তবে কেউ প্রক্টর বা রেজিস্ট্রার অফিসে নির্দিষ্ট অভিযোগ দেয়নি। মামলা চলমান থাকলেও সাক্ষীরা সাক্ষ্য না দেওয়ায় চার্জশিট দাখিল হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “আগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যার আহ্বায়ক বিদেশে চলে যাওয়ায় প্রতিবেদন জমা হয়নি। উপাচার্য কমিটি রিফর্ম করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।”

অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, “ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে মামলা হয়েছে। আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি, বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
https://slotbet.online/