আইএফআইসি ‘আমার বন্ড’ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তার ছেলে সায়ান ফজলুর রহমান এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতকে পুঁজিবাজার থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনজনকে মোট ১৫০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিএসইসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিএসইসি’র ৯৬৫তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পুঁজিবাজার অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড ২০২৩ সালের ৪ জুন ১৫০০ কোটি টাকার অভিহিত মূল্য এবং ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যে অনুমোদন দেওয়া হয়। শ্রীপুর টাউনশিপ নামে কোম্পানিটি নিবন্ধিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বন্ড ইস্যুর আবেদন করে। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ছিল মাত্র ৩৫০ কোটি টাকা এবং চার দিনের ব্যবধানে ভূমি উন্নয়নের জন্য ২৪৮ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। বিষয়টি কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।
যদিও আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি, বরং জামিনদার হিসেবে যুক্ত ছিল, তবুও ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ উত্তোলন করা হয়। সালমান এফ রহমান ছিলেন সে সময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান, সায়ান রহমান ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান।
বিএসইসি জানায়, ‘বেক্সিমকো সিকিউরড কনভার্টিবল অর রিডিমেবল অ্যাসেট-ব্যাকড গ্রিন সুকুক’ নামের ৩০০০ কোটি টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি বন্ড ২০২১ সালের ২৩ জুন অনুমোদিত হয়। এর ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। ২০২১ সালের ১৭ জুলাই অনুমোদিত ৫০০ কোটি টাকার সুকুকের মধ্যে শর্ত ভেঙে বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ ৩২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার দায়ে বেক্সিমকোর পরিচালক নাসিমা রহমান, ড. শামসুন আহমেদ এবং এ এম আহসান উল্লাহকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন মনোনীত পরিচালক নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক শুদ্ধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করা হয়েছে।
এছাড়া, রেটিং প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডকে (ইসিআরএল) ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সুকুকের গ্রিন ভ্যালিডেশন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইসিআরএল এবং নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান এমজে আবেদিন অ্যান্ড কো. চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধেও বিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
https://slotbet.online/