নাটোরে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে হঠাৎ পেটের অসুখে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৪৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬৬ জন, নারী ৫৫ জন এবং শিশু ২৬ জন। রোগীর চাপ সামলাতে সদর হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডকে ডায়রিয়া ইউনিট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, পৌরসভার সরবরাহকৃত পানিই অসুস্থতার মূল কারণ। অনেকের মতে, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর পানি পানের পর থেকেই তারা পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও বমিতে ভুগতে শুরু করেন। প্রাথমিক ওষুধে কাজ না করায় রাত থেকেই হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়তে থাকে। বুধবার সকাল নাগাদ ঝাউতলা, কাঁঠালবাড়ি, ঘোড়াগাছা ও ডোমপাড়া এলাকার আরও শতাধিক মানুষ একই উপসর্গে ভর্তি হন।
রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে পৌরসভার পানি ঘোলা ও দুর্গন্ধযুক্ত আসছিল। অন্য বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়ে এ পানি খেতে হচ্ছিল।
পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হক বলেন, একই উৎস থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানি সরবরাহ করা হলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে কেবল একটি এলাকায়। সরবরাহ লাইনে ত্রুটি আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক মাহাবুবুর রহমান জানান, পানিবাহিত কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে টানা গরমে পানিশূন্যতাও (ডিহাইড্রেশন) পরিস্থিতি জটিল করেছে। রোগীদের চিকিৎসায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসক-নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুক্তাদির আরেফিন বলেন, আক্রান্তদের উপসর্গ মূলত পানিবাহিত রোগের সঙ্গে মিল রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে আইসিডিডিআরবির একটি দল নাটোরে যাচ্ছে এবং তারা পানি পরীক্ষা করে কারণ জানাবে। আক্রান্ত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক আসামা শাহীন জানান, রোগীদের দেখতে তিনি হাসপাতালে গিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সরবরাহ পানির মাধ্যমেই এত মানুষের অসুস্থতা ঘটেছে। ইতোমধ্যে পানির নমুনা পরীক্ষার জন্য বগুড়ার জনস্বাস্থ্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ মজুত আছে, তাই আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
https://slotbet.online/