[ad_1]
তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। এ সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম হয়ে বের হয়। এতে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে শরীরে অস্বস্তি, ক্লান্তির মত একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। তাই শরীর হাইড্রেটেড রাখতে আপনাকে খেতে হবে পানি ও পানিযুক্ত খাবার। এক সময় বলা হতো গরমে সুস্থ থাকতে পানসে সবজি, টক, খাট্টা, শুক্তো, তেঁতো-এগুলো বেশি খেতে হবে। আসলেই কি এগুলো গরমে প্রশান্তিদায়ক? চলুন দেখি, এ কথার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কী।
গরমে ঘামের সঙ্গে দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান, যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড বেরিয়ে গিয়ে অনেক জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই এ সময় ডাবের পানি, কলা, স্যালাইন, আখের গুড়ের শরবত, লেবুর শরবত, তেঁতুলের পাতলা পানি, কাঁচা আমের শরবত বেশি খেতে হবে।
আমাদের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে, কোন খাবার গরমে খাদ্য তালিকা থেকে কমিয়ে দিতে হবে অথবা কোন খাবার একেবারেই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। মানুষের অসচেতনতার কারণে খাদ্য সম্পর্কিত দীর্ঘমেয়াদি রোগ হয়।
কোনো ব্যক্তি যদি উপরোক্ত যে কোনো ১টি বা সবগুলোতে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয় তবে তাদের এই গরমে কিছুটা স্বস্তির জন্য অত্যন্ত সজাগ হতে হবে কেন না প্রচণ্ড গরমে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন- ১. দেহে সোডিয়াম কমে যাওয়া, ২. পটাসিয়াম কমে যাওয়া, ৩. বমি হওয়া, ৪. খাদ্য হজম না হওয়া ও পেট ফাপা, ৫. ডায়রিয়া, ৬. আমাশয়, ৭. জ্বর।
যা খাওয়া উচিত-
প্রচুর পানি ও পানীয়:
শরীরকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করার জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। ডাবের পানি, বেলের শরবত, লেবুর শরবত, এবং ফলের জুস পান করা যেতে পারে।
রসালো ফল ও সবজি:
তরমুজ, শসা, লেবু, পেয়ারা, আনারস, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি ফল ও সবজিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে, যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
দই ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার:
দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ এবং হজমে সাহায্য করে। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।
হালকা ও সহজপাচ্য খাবার:
হালকা খাবার, যেমন পান্তা ভাত, সালাদ এবং সবজি দিয়ে তৈরি ঠান্ডা স্যুপ গরমের দিনে শরীরকে সতেজ রাখে।
শীতলতা সৃষ্টিকারী উপাদান:
পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, এবং অন্যান্য শীতল উপাদানযুক্ত খাবার ও পানীয় গ্রহণ করুন।
যা পরিহার করা উচিত-
ভাজা ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার:
অতিরিক্ত তেল ও মশলাযুক্ত খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ভাজাভুজি, চপ, সিঙ্গারা, ফ্রায়েড চিকেন ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
চা, কফি ও অ্যালকোহল:
চা, কফি ও অ্যালকোহল শরীরকে পানিশূন্য করতে পারে, তাই এগুলো গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়:
চিনিযুক্ত পানীয় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং ক্লান্তি ও অবসাদ তৈরি করতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার:
প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো হজম করা কঠিন এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
তাজা ফলের পরিবর্তে শুকনো ফল:
শুকনো ফলে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে, তাই তাজা ফল গ্রহণ করা ভালো।
এছাড়াও গরমে শারীরিক পরিবর্তনগুলোকে প্রতিরোধ করতে খাবারের গুরুত্ব অপরীসিম। গরমে সঠিক পুষ্টির লক্ষ্যে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় যে দিকগুলো খেয়াল রাখতে হবে তা হল-
প্রথম ও প্রধান সাবধানতা হল বাহিরের খোলা জায়গার পানি, শরবত, আখের রস পরিহার করা, এগুলো গ্রহণের ফলে সৃষ্ট ডায়রিয়া, আমাশয় হয়।
নিরাপদ বিশুদ্ধ পানি পান করা, ঘরের তৈরি শরবত, পানি জাতীয় শাকসবজি ও ফল বেশি খাওয়া।
গরমে ডাব, তরমুজ, বাঙ্গি, বেলের শরবত এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে হাত ধুয়ে খাবারের উপযোগী করা।
গরমে মাছ, মাংস, ভুনা, ভাজি, খিচুড়ি, পোলাও, ফাস্টফুড কমিয়ে পাতলা আম ডাল, পাতলা দুধ, টকদই, করলার ঝোল তরকারি, লেবু চিনির শরবত, সালাদ, রসালো ফল খাওয়া যেতে পারে।
গরমে সাদা ভাত, পোলাও, বিরানি, খিচুড়ি পরোটা থেকে অনেক বেশি খাদ্যোপযোগী।
যারা নিয়মিত হাঁটেন, তারা শুধু সময় পরিবর্তন করলেই চলবে। যেমন সকালে না হেঁটে বিকাল/সন্ধ্যার পর হাঁটা বেশি আরামদায়ক।
গরমে খুব বেশি হাঁটা, ব্যায়াম, অত্যাধিক পরিশ্রম, অত্যাধিক খাদ্য গ্রহণ পরিহার করুন।
পোশাক পরুন আরামদায়ক। হালকা রং বেছে নিন পোশাকে।
নিজস্ব পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
[ad_2]
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ আব্দুল লতিফ
প্রধান সম্পাদকঃ এম এস এন মাসুক হিমেল
সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ হাউজ ২৪, রোড ৩, মনিপুরি পাড়া, ফার্মগেট ঢাকা।
আঞ্চলিক কার্যালয়ঃ ৭ মতি কমপ্লেক্স রোড চকবাজার চট্টগ্রাম
মোবাইলঃ ০১৯৯৪৪২২৭৮৯
ই-মেইলঃ news@dainikprovhatersangbad.com