[ad_1]
লিসবন (Lisbon), পর্তুগালের রাজধানী ও সবচেয়ে বড় শহর, শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র নয় এটি পর্তুগালের ইতিহাস, যার পথে প্রান্তে রয়েছে হাজার বছরের সংস্কৃতি, শিল্প ও আবিষ্কারের প্রতীক। আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে অবস্থিত এই শহরটি ইউরোপের প্রাচীনতম শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম হাজার বছরের ঐতিহ্য ও পরিবর্তনের সাক্ষী।
লিসবন অবস্থিত শহরটি অবস্থিত পর্তুগালের পশ্চিমাংশে, টাগুস (Tagus) নদীর মুখে। এই নদী ও সমুদ্রপথের কাছাকাছি অবস্থানই একে প্রাচীনকাল থেকেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী ও ব্যবসায়িক কেন্দ্র বানিয়েছে। এই শহর ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের এক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছে।
লিসবনের ইতিহাস প্রায় ৩০০০ বছর পুরনো। ধারণা করা হয়, ফিনিশীয়রা প্রথম এই অঞ্চলকে “Alis Ubo” নামে চিনত। পরবর্তীতে এটি রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায় এবং তখন এর নাম ছিল “Felicitas Julia”।
৮ম শতকে মুর (Moor) আরবরা শহরটি দখল করে এবং প্রায় ৪০০ বছর শাসন করে। এরপর ১১৪৭ সালে খ্রিস্টান রাজা আলফনসো, হেনরিকস,ক্রুসেডারদের সহায়তায় শহরটি দখল করেন এবং এটি পর্তুগিজ রাজ্যের অংশ হয়।
১৫শ থেকে ১৬শ শতাব্দীতে, পর্তুগাল বিশ্বের অন্যতম সামুদ্রিক শক্তি হয়ে ওঠে। ভাস্কো দা গামা এই লিসবন থেকেই তার ঐতিহাসিক সমুদ্রযাত্রায় যাত্রা শুরু করেন এবং ভারত পৌঁছান।
এই সময়কে পর্তুগালের স্বর্ণযুগ (Golden Age) বলা হয়। লিসবন হয়ে ওঠে বিশ্ববাণিজ্যের কেন্দ্র যেখানে মসলা, সোনা, হাতির দাঁত ও দাসদের লেনদেন হতো শত বছরের প্রাচীন এই শহরে।
শহরটিতে ১৭৫৫ সালের ভূমিকম্প ও পুনর্গঠ ১ নভেম্বর ১৭৫৫একটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে পুরো লিসবন শহর প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। ভূমিকম্পের পরপরই আসে সুনামি ও অগ্নিকাণ্ড। এতে ৭০,০০০-এর বেশি মানুষ মারা যান।পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী মারকুইস অব পম্বাল (Marquês de Pombal)শহরটি পরিকল্পিতভাবে পুনর্গঠন করেন। আজকের “বাইশা (Baixa)” এলাকাটি সেই আধুনিক পরিকল্পনার ফল।
লিসবন হলো,ফাদো সংগীত,আজুলেজু টাইলস, ও বারোক স্থাপত্য শহর। শহরের আলফামা (Alfama) এলাকা এখনও মধ্যযুগীয় ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
বিশ্বখ্যাত জাদুঘর, লাইব্রেরি, এবং গ্যালারিতে ভরপুর শহরটি বর্তমানে একদিকে ঐতিহ্য সংরক্ষণ করছে, অন্যদিকে আধুনিক প্রযুক্তি, ডিজাইন, ও পর্যটন শিল্পে এগিয়ে যাচ্ছে।বেলেম টাওয়ার (Belém Tower)১৫শ শতকের প্রতিরক্ষা কাঠামো,
জেরোনিমোস মনাস্ট্রি, ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহাসিক স্থাপনা,রসিও স্কয়ার,কমার্স স্কয়ার,সান্তা জুস্টা লিফট
২৫ এপ্রিল ব্রিজ– গোল্ডেন গেট ব্রিজের অনুকরণে নির্মিত লিসবন ক্যাথেড্রাল আলফামা জেলা ইতিহাস ও সংস্কৃতির চিহ্ন
বর্তমানে লিসবন একটি বহুজাতিক, বহুসাংস্কৃতিক ও উদ্যমী শহর। এটি ইউরোপের ডিজিটাল হাব হিসেবে গড়ে উঠছে। প্রতিবছর লাখো পর্যটক এখানে আসেন লিসবনের পুরনো গলি, ঐতিহাসিক ভবন ও নদীতীরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
লিসবন কেবল একটি রাজধানী নয়, বরং এটি একটি জীবন্ত ইতিহাসের শহর যেখানে প্রাচীনতা ও আধুনিকতা পাশাপাশি পথ চলেছে। বলা যেতেই যারা ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির মিলন দেখতে চান, তাদের জন্য লিসবন এক অনন্য গন্তব্য
[ad_2]
https://slotbet.online/