[ad_1]
ভারতে তামিলনাড়ুতে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে ৩৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর ভক্তদের কাছে পরিচিত ‘থালাপতি বিজয়’ নামে। অভিনয়ে প্রায় তিন দশকের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার কাটানোর পর জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় পর্দার কাজ থেকে বিদায় নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে বড় সুপারস্টাদের একজন বিজয় ২০২৪ সালে তার রাজনৈতিক দল ‘তামিলাগা ভেট্রি কালাগাম’ (টিভিকে) গঠনের ঘোষণা দেন।
কে এই থালাপতি বিজয়?
থালাপতি বিজয়ের জন্ম ১৯৭৪ সালের ২২ জুন, চেন্নাইয়ে। আসল নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। তার বাবা এস. এ. চন্দ্রশেখর একজন চলচ্চিত্র পরিচালক। প্লেব্যাক গায়িকা মা শোভা চন্দ্রশেখরও ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত মুখ।
ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি বিজয়ের আগ্রহ ছিল। সেই সূত্রেই ১০ বছর বয়সে ১৯৮৪ সালে পি. এস. বীরাপ্পা প্রযোজিত তামিল চলচ্চিত্র ‘ভেট্রি’র মাধ্যমে শিশুশিল্পী হিসেবে তার অভিষেক হয়। পরের বছরগুলোতে তিনি আরও কিছু চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নান সিগাপ্পু মানিথান’ ছবিতে কিংবদন্তি অভিনেতা রজনীকান্তের সঙ্গেও শিশুশিল্পী হিসেবে পর্দায় হাজির হন।
এর আট বছর পর, ১৮ বছর বয়সে, ১৯৯২ সালে ‘নালাইয়া থিরপু’ চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রাভিনেতা হিসেবে বিজয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর তিনি ‘সেন্থুরাপান্ডি’, ‘রসিগান’, ‘দেবা’ ও ‘কয়ম্বাটুর মাপ্পিল্লাই’-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার সবগুলোই ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়।
থালাপতি বিজয় টানা ৯টি হিট চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। তার একাধিক সিনেমা ২০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে।
২০০৩ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বিজয় তামিল সিনেমার শীর্ষস্থানীয় অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০০৩ সালে তার ‘থিরুমালাই’ ছবিটি ব্যাপক হিট হয়। এটি প্রথম তামিল চলচ্চিত্র হিসেবে দেশের বক্স অফিসে ৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করে। প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দর্শকের সিনেমাটি দেখার রেকর্ডও ভেঙে দেয় এ সিনেমা।
পরের বছরগুলোতে বিজয়ের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হতে থাকে। তার সিনেমার টিকিট কেনার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতেন ভক্তরা।

সাফল্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বিজয়ের পারিশ্রমিকও। ভারতের প্রথম অভিনেতা হিসেবে তিনি একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন।
প্রযোজক অর্চনা কালপাথি এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘দ্য গ্রেটেস্ট অভ অল টাইম’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য বিজয়কে ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি শাহরুখ খান, সালমান খান, প্রভাস, আল্লু অর্জুন, রজনীকান্ত ও আমির খানের মতো তারকাদের পেছনে ফেলে ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা বনে যান।
তিন দশকে বিজয় ৬৮টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এসব ছবিতে তিনি প্রায়ই সামাজিক ন্যায়বিচার, সাহস ও সাধারণ মানুষের মন জয় করা চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
‘থুপ্পাক্কি’, ‘কাত্থি’, ‘মার্সাল’, ‘মাস্টার’ ও ‘লিও’-এর মতো ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিজয় তামিল সিনেমার জগতে গভীর প্রভাব ফেলেছেন। বাণিজ্যিক সাফল্য দিয়ে গত দুই দশকে তিনি এই ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও প্রভাবশালী তারকাদের একজন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
অভিনয় ছেড়ে রাজনীতিতে
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিজয় তার রাজনৈতিক দল টিভিকে প্রতিষ্ঠা করেন এবং চলচ্চিত্র জগৎ থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।
রাজনীতিতে আসার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার শখ নয়, এটা আমার গভীরতম আকাঙ্ক্ষা। নিজেকে আমি এর সঙ্গে পুরোপুরি যুক্ত করতে চাই। তাই আমি আর একটি সিনেমার কাজ শেষ করে পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ হয়ে উঠব। এভাবেই আমি তামিলনাড়ুর মানুষের কাছে আমার ঋণ শোধ করতে চাই।’
বিজয়ের শেষ চলচ্চিত্র ‘জন নায়গন’
অভিনেতা হিসেবে থালাপতি বিজয়ের শেষ চলচ্চিত্র হতে যাচ্ছে তার ৬৯তম সিনেমা ‘জন নায়গন’। এইচ. বিনোদ পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে আরও অভিনয় করেছেন পূজা হেগড়ে, ববি দেওল, গৌতম বাসুদেব মেনন, প্রিয়ামণি, প্রকাশ রাজের মতো তারকারা। কেভিএন প্রোডাকশনসের ব্যানারে ভেঙ্কট কে. নারায়ণ প্রযোজিত ‘জন নায়কান’ আগামী বছর পোঙ্গাল উৎসব উপলক্ষে ২০২৬ সালের ৯ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
[ad_2]
https://slotbet.online/