[ad_1]
রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তার মতে, ধীরে ধীরে সেখানে স্থিতিশীলতা ফিরছে এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নিজ গ্রামে ফেরত যেতে শুরু করেছে। স্থানীয় প্রশাসনেও এখন রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। এমনকি আরাকান আর্মী রাখাইনে একটি প্রধান শহরে রোহিঙ্গাদের জন্য গ্র্যান্ড মসজিদ নির্মাণ করেছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত “বিশ্ব শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয় ব্যবস্থা: কী ভুল হয়েছে এবং কীভাবে এটি ঠিক করা যায়” শীর্ষক আলোচনায় এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ল্যান্ডাউ ছাড়াও পানামা, লাইবেরিয়া, বাংলাদেশ ও কসোভোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
শরণার্থীদের আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ড. খলিলুর রহমান ১৯৭১ সালের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, সেই সময় ভয়াবহ গণহত্যার মুখে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, তবে যুদ্ধ শেষে সবাই নিজ দেশে ফিরে আসে। বর্তমানে বাংলাদেশ ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে, যা একটি বড় মানবিক দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ।
তিনি জানান, গত আট বছরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের জন্য ৫০০ কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করেছে, যার বড় অংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। কিন্তু এই ব্যয় সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। তার মতে, রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে চায় এবং তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কাউকে মিয়ানমারে পাঠাবে না, আবার দীর্ঘমেয়াদেও তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাংলাদেশে রাখা সম্ভব নয়।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গারা বারবার জানাচ্ছে তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে আগ্রহী। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগিয়ে আসা। শুধু তহবিল দিয়ে মানবিক সহায়তা নয়, বরং রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে মিয়ানমারে টেকসই সমাধান তৈরি করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, রাখাইনের ৮৫–৯০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে আরাকান আর্মীর নিয়ন্ত্রণে। ওই অঞ্চলে তারা রোহিঙ্গাদের নিজ গ্রামে ফেরত পাঠানো ও স্থানীয় প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। নতুন মসজিদ নির্মাণও তার প্রমাণ।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সতর্ক করে বলেন, প্রতিবছর কক্সবাজার শিবিরে প্রায় ৩০ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে, যারা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে বেড়ে উঠছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, “আমরা কি রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে তাদের জীবনকে আশাব্যঞ্জক করতে পারি না?”
তিনি আহ্বান জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি স্পষ্ট করেন, বাংলাদেশ চায় আগামী ৩–৪ বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা শিবিরে অর্থ ব্যয় বন্ধ করে সেই অর্থ মিয়ানমারে বিনিয়োগ করা হোক, যেখানে রোহিঙ্গারা নতুন জীবন শুরু করতে পারবে।
আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ড. খলিলুর রহমান আশা প্রকাশ করেন, এই সম্মেলন থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এই আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল বিদ্যমান আন্তর্জাতিক শরণার্থী ও আশ্রয় ব্যবস্থার ত্রুটি তুলে ধরা এবং সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে তা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা। অনুষ্ঠানটি দীর্ঘমেয়াদে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংলাপের একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে।
[ad_2]
উপদেষ্টা সম্পাদকঃ আব্দুল লতিফ
প্রধান সম্পাদকঃ এম এস এন মাসুক হিমেল
সম্পাদকীয় কার্যালয়ঃ হাউজ ২৪, রোড ৩, মনিপুরি পাড়া, ফার্মগেট ঢাকা।
আঞ্চলিক কার্যালয়ঃ ৭ মতি কমপ্লেক্স রোড চকবাজার চট্টগ্রাম
মোবাইলঃ ০১৯৯৪৪২২৭৮৯
ই-মেইলঃ news@dainikprovhatersangbad.com