[ad_1]
রাজধানীর নিকুঞ্জে ব্যবসায় বিনিয়োগের কথা বলে এক মা- ছেলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। কয়েক মাস বিনিয়োগেই দ্বিগুণ মুনফা; এমন লোভনীয় প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইতোমধ্যে এই চক্রটি কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার টার্গেটের শিকার হয়েছেন স্থানীয় নিরিহ ও অল্পশিক্ষিত কিছু মানুষ।
জানা গেছে, রাজধানীর নিকুঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন সুফিয়া বেগম ও তাঁর ছেলে রফিকুল ইসলাম। রুদ্র টেক্স জোন নামে একটি নামসর্বস্ব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তাদের। সেখানেই বিনিয়োগে নানা ধরনের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলেন স্থানীয়দের। কৌশল হিসেবে প্রথমে সুফিয়া বেগম স্থানীয়দের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন এবং ছেলেকে বড় ব্যবসায়ি হিসেবে পরিচয় দেন।
মা- ছেলের প্রতারণা চক্রের শিকার খিলক্ষেতের বাসিন্দা রকিবুর রহমান রকি। তিনি জানান, তাকে মোটা অংকের লাভের প্রলোভনে ফেলে কয়েক দফায় ৬০ লাখ টাকা নিয়েছে তারা। এই টাকার বিপরীতে ব্যাংক চেক ও চুক্তিনামা দলিলও দিয়েছেন। কিন্তু চুক্তিপত্রের অঙ্গীকার রক্ষা করেনি মা-ছেলে।
শুধু রকি নয়, এমন অভিযোগ নিকুঞ্জ ও খিলক্ষেত এলাকার ডজনখানেক বাসিন্দার। এদের মধ্যে নিকুঞ্জের জাহিদের নিকট থেকে নেন ৪৫ লাখ টাকা। নিকুঞ্জের আবিরের নিকট থেকে ২০ লাখ, হাসানের থেকে ২০ লাখ, উত্তরার রুবেলের থেকে ১৫ লাখ এবং ওমরের থেকে ১০ লাখসহ আরও কয়েকজন রয়েছে। এভাবে এই চক্র কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পাওনাকৃত টাকা ফেরত চাইলে উল্টো পাওনাদারদের নানারকম হুমকি দেন তারা। এরইমধ্যে মা-ছেলে হঠাৎ করে নিকুঞ্জ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।
জানা গেছে, সুফিয়া বেগম সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। পাওনাদারদের ব্যবসায়িকভাবে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে প্রতারণার নতুন ফাঁদ পাতেন। পাওনাদারদের টাকা ফেরতে শর্ত দেন, অনৈতিকভাবে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের বিভিন্ন নিয়োগের বিপরীতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি প্রদানের ফাঁদ। বলেন, চাকুরী প্রার্থীদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে পাওনা পরিশোধ করবেন। সেই ফাঁদেও পা দিয়ে অনেকেই নতুন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
প্রতারণার শিকার রকিবুর রহমান রকি বলেন, বিভিন্ন সময়ে রফিকুল ও তাঁর মা সুফিয়া বেগম পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও টাকা ফেরত দেননি। উল্টো তাকে হয়রানি করে। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের মাধ্যমে মা-ছেলের নামে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন। যা ঢাকার সিএমএম কোর্টে চলমান রয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামী রফিকুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই রকিবুর রহমান রকি নিকট থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। যা এক মাস পর ১৬ আগস্ট পরিশোধ করার শর্তে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিবদ্ধ হন। পাশাপাশি সমপরিমাণ টাকার একটি ব্যাংক চেকও প্রদান করেন। যাহার চেক নং- BI25-A-7466304 পূবালী ব্যাংক লিমিটেড।
১৬ আগস্ট পাওনা টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও অদ্য পর্যন্ত কোন টাকা পরিশোধ এবং চেকটি ফেরত নেননি। চুক্তির শর্ত সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সময় বাদীর পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারেন নাই বিধায় দেই দিচ্ছি বলে দীর্ঘদিন যাবৎ হয়রানি করতে থাকে। পরবর্তীতে রফিক টাকা দিতে না পারায় মা সুফিয়া বেগমক পাওনা টাকা পরিশোধ করবেন না বলিয়া জানান। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রকির কাছে টাকা ফেরত চাইলে দিবে না বলে জানান। এমনকি, ভবিষ্যৎ এই টাকা চাইলে রকিকে প্রাণনাশের হুমকি দেন রফিকুল ইসলাম। যেহেতু রফিকুল ও তাঁর মা সুফিয়া পরিকল্পিতভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বড় অংকের টাকা গ্রহণ করে ফেরত না দেওয়ার হুমকি দিয়ে দন্ডবিধি ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারার অপরাধ করছেন। ফলে বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতের এখতিয়ারাধীন হওয়ায় রকিবুর রহমান রকি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সুফিয়া বেগম বলেন, রকির বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করবো না। সে আমাদের অনেক হয়রানি করছে। আদালতে মামলা করছে। মামলা চলমান। এবিষয়ে আমি কিছুই বলবো না। যা বলার আদালতে বলবো।
রুদ্র টেক্স জোনের কর্ণধার রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
[ad_2]
https://slotbet.online/